কুষ্টিয়ায় চাঁদাবাজির দখল নিতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৮
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ AM , আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ AM
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে দলটির চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির দখলে নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলো। গত এক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই চিত্র দেখা গেছে। এবার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সাব-রেজিস্টার অফিসে চাঁদাবাজির দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৮ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। বুধবার দুপুরে দৌলতপুর উপজেলা বাজার চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত সরকারের শাসনকালে উপজেলা সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হতো। বিষয়টি ছিল ওপেন সিক্রেট। এ চাঁদার অর্থ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা, অফিসের কর্মকর্তা ও দলিল লেখকরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিতেন। সরকার পতনের পর আগের চাঁদাবাজরা গা ঢাকা দিলে এর দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে বিএনপিপন্থীরা। তাঁরা প্রথমেই আওয়ামীপন্থী দলিল লেখকদের মারপিট করে সেখান তাদের থেকে বের করে দেন। এরপর আগের প্রক্রিয়ায় তারাও দলিল প্রতি চাঁদা উত্তোলন শুরু করেন।
দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেলের অভিযোগ, উপজেলা ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কতিপয় নেতা-কর্মী এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত। কর্নেল বলেন, তাঁর বাবা দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আকবর আলী’র নাম ভাঙ্গিয়ে এই চাঁদাবাজি করা হচ্ছিল। এ কারণে কর্নেল ও আকবর আলী এই চাঁদাবাজির প্রতিবাদ জানান। বিষয়টি শেষ পর্যন্ত উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পর্যন্ত গড়ায়। কর্নেল জানান, এরপর দলের শীর্ষ নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দেন।
জানা গেছে, বুধবার সকালে দৌলতপুর উপজেলা বাজারে স্থানীয় বিএনপি’র কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন উভয় পক্ষ। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রেজিস্ট্রি অফিসে চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেলের নেতৃত্বে মিলন, হিমেলসহ ২০-২৫ জন জাফর ইকবাল কর্নেল ও তার সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা লাঠি সোঁটা দিয়ে তাদের বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় হামলার শিকার হন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বয়োবৃদ্ধ নেতা আকবর আলী। এতে দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল কর্নেল (৩২) ও তার অনুসারী মাসুদ পারভেজ (২৪), কৌশিক (২০) ও রতনসহ (২২) কমপক্ষে ৮ জন আহত হন। গুরুতর আহত কর্নেল, মাসুদ পারভেজ, কৌশিক ও রতনকে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত দৌলতপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাফর ইকবাল জানান, বিগত ১৭ বছর তিনি এবং তার বাবা আওয়ামী লীগের হামলা মামলায় নিষ্পেষিত। আওয়ামী লীগের লোকদের ভয়ে উপজেলার কোথাও বিএনপি অফিস চালাতে সক্ষম না হলেও তার বাবা উপজেলা বাজারের বিএনপির অফিস টিকিয়ে রেখেছিলেন। সেই অফিসেই নিজ দলের লোকদের হামলার শিকার হয়েছেন তারা। তিনি দলীয় হাইকমান্ডের কাছে এর বিচার দাবি করেন।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মাসুদুজ্জামান রুবেলের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।