মানববন্ধনে বক্তা

‘খাল সংস্কার না করলে মহিলারা ইউএনওকে পানির মধ্যে বেঁধে রাখবে’

ভবদহ
  © সংগৃহীত

অনেকেই ভবদহ বিলকে যশোরের দুঃখ বা যশোরের কান্না বলে থাকেন। টানা বৃষ্টিতে প্রায় প্রতিবছরই এই বিলে পানি জমে যায়। এবারও টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানে যশোর শহর থেকে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে ভবদহের দুই শতাধিক বাড়িঘর। এই এলাকার স্কুল, কলেজ, রাস্তাঘাট, ধর্মীয় উপাসনালয়ও এখন পানির তলে। ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ভবদহে প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দুই লক্ষাধিক মানুষ। দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। 

এ অবস্থায় আজ রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। জলাবদ্ধ ভবদহ এলাকা থেকে দ্রুত পানি সরানোর দাবিতে ভবদহ এলাকাবাসীর আয়োজনে আজ দুপুরে যশোর–খুলনা মহাসড়কের নওয়াপাড়ায় মানববন্ধন করেন। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এলাকার কয়েকশ নারী–পুরুষ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা এ মানববন্ধনে অংশ নেন। 

মানববন্ধনে ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিৎ বাওয়ালি বলেন, ‘ভবদহ এলাকায় এ বছর ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এক লাখ লোক বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। তাদের দুঃখ দুর্দশার শেষ নেই। সরকার পানি সরানোর জন্য এ পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’ 

এরপর তিনি ইউএনওর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আগামীকাল (সোমবার) থেকে আমডাঙা খাল সংস্কার কাজ শুরু না করলে জলাবদ্ধ এলাকার হাজার হাজার মহিলা এসে আপনাকে (ইউএনও) ধরে নিয়ে জলের মধ্যে বেঁধে রাখবে!’ 

মানববন্ধনে ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে বিল কপালিয়ায় দ্রুত টিআরএম (টাইডাল রিভার ম্যানেজমেন্ট বা জোয়ারাধার) চালু ও আমডাঙা খাল সংস্কারের দাবি জানানো হয়। 

মানববন্ধন থেকে দ্রুত পানি সরানোর কার্যকর উদ্যোগ না নিলে আগামী ৬ অক্টোবর ভবদহ দিবসে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এ সময় অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী হাজির হয়ে জলাবদ্ধতা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে করণীয় সবকিছু করার আশ্বাস দেন।