বরিশালে শিক্ষক সমিতি বনাম শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) সংঘর্ষে মরিচ গুড়া নিক্ষেপ

বরিশাল
  © ফাইল ছবি

বরিশাল নগরীতে শিক্ষক সমিতির প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ বিরাজ করছে। এই বিরোধের জেরে আবারও শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে নগরীর ফকিরবাড়ি সড়কের শিক্ষক ভবন দখলে নেন একপক্ষ। অন্যপক্ষ বাধা দিলে হাতাহাতির এক পর্যায়ে মরিচের গুড়া নিক্ষেপ করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা এসে দু’পক্ষকেই ভবন থেকে নামিয়ে দেন।

পাঁচ তলা শিক্ষক ভবন নিয়ে ২০০৩ সালে বিরোধ দেখা দেয়। একপক্ষের নেতৃত্বে আছে মাধ্যমিক শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। অন্যপক্ষে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান)।

একাধিক শিক্ষক জানান, ১৯৯০ সালে ঐক্যবদ্ধ সংগঠন থাকাকালে ফকিরবাড়ি সড়কে ৮ শতক জমি কিনে, সেখানে পাঁচ তলা বাণিজ্যিক ভবন করা হয়। ২০০৩ সালে সংগঠন ভেঙে শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) হলে ভবনটি তাদের দখলে ছিল। পরে ২০১২ সালে তাদের হটিয়ে অপরপক্ষ দখল নেয়। ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হলে, পরদিন ভবনটি দখলে নেয় কামরুজ্জামান গ্রুপ। শনিবার রাতে তাদের হটিয়ে পাল্টা দখল নেয় শিক্ষক সমিতি। প্রতিবারই রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক নেতাদের বিরুদ্ধে।

শিক্ষক সমিতির আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল আলম আসাদ বলেন, ১৯৯০ সালে জমি কেনার সময়ে অন্য সংগঠন থেকে নিজেদের পৃথক চিহ্নিত করতে শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জামান) নামে দলিল হয়। ২০০৩ সালে কামরুজ্জামান নেতৃত্ব হারালে মূল সংগঠন থেকে বেরিয়ে শিক্ষক সমিতি (কামরুজ্জান) নামে পৃথক সংগঠন করেন। সেই সংগঠনের বরিশাল শাখার নেতৃবৃন্দ দলিল সূত্রে এখন সম্পত্তির মালিক দাবি করছেন। কিন্তু ঐক্যবদ্ধ অবস্থায় সব শিক্ষকদের টাকায় কেনা সম্পত্তি একটি পক্ষ কখনও মালিক হতে পারে না।

শিক্ষক সমিতির (কামরুজ্জামান) সভাপতি প্রনব ব্যাপারী বলেন, দলিল অনুযায়ী তারা এ সম্পত্তির মালিক। কিন্তু শিক্ষক সমিতি ১৫ বছর ধরে অবৈধভাবে ভবনের দখল রেখেছিল। সরকার পতনের পর আমরা পুনরুদ্ধার করেছি। শনিবার রাতে আবারও দখলদাররা ভবনে আসে। উত্তেজনা দেখা দিলে স্থানীয়রা দু’পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষক ভবনের দখল নিয়ে শনিবার রাতে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয়রা ভবনে তালা দিয়ে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছেন শুনেছি। তবে থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।