অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন গুলিবিদ্ধ কারিমুল 

বৈষম্যবিরোধী
  © সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে আহত কারিমুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবক মারা গেছেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভোর সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুরোনো বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে তিনি মারা যান। সেই হিসাবে ৫৬ দিন পর মারা গেলেন তিনি। 

ঢাকা মেডিক্যালে নিহত কারিমুলের খালু আজিজুল ইসলাম জানান, তাদের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার কাচারহাটি গ্রামে। স্ত্রী ময়না আক্তারকে নিয়ে যাত্রাবাড়ী কুতুবখালী নূর মসজিদের সামনের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন কারিমুল এবং যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারে লেবুর আড়তে শ্রমিকের কাজ করতেন। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় কারিমুল। এক বছর আগে বিয়ে করেছিলেন তিনি। স্ত্রী ময়না বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। 

আজিজুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে কয়েকজন ছাত্র তাকে ফোন দিয়ে জানান কারিমুল যাত্রাবাড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তারা ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে গিয়ে কারিমুলকে আহত অবস্থায় দেখতে পান। 

তিনি আরও জানান, এরপর থেকে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। বুকে, থুতনিতে এবং ডান হাতে গুলি লেগেছিল তার। কয়েক দফায় তার অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। তবে বুকের গুলিটি বের করা সম্ভব হয়নি। গত ১০-১২ দিন আগ থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে আইসিইউতে নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ভোরে তিনি মারা গেছেন। 

আন্দোলনের দিন কারিমুলের সঙ্গে থাকা বন্ধু নুর উদ্দিন জানান, ৫ আগস্ট সকাল থেকে তারা যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। দুপুরের পর যখন যাত্রাবাড়ী থানা চারদিক থেকে আন্দোলনরতরা ঘিরে ফেলেন, তখনো একসঙ্গেই ছিলেন কারিমুল ও নুর উদ্দিন। হঠাৎ থানার ভেতর থেকে সব পুলিশ সদস্য একযোগে বের হয়ে ফ্লাইওভারের নিচে থাকা অসংখ্য আন্দোলনকারীর ওপর নির্মমভাবে গুলি চালাতে থাকেন। তখন নুর উদ্দিন কাজলার দিকে দৌড় দেন আর কারিমুল দৌড় দেন যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার দিকে। এরপর মূলত দুজন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। কয়েক ঘণ্টা পর খবর পান, কারিমুল গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

ঢাকা মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কারিমুলের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।