টানা ছুটিতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৮ PM , আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৮ PM

শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হয়ে টানা চারদিন ছুটি চলছে দেশে। আর এই সুযোগে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে নেমেছে পর্যটকের ঢল।
শুক্র ও শনিবার দুইদিনে সবগুলো হোটেল শতভাগ বুকিং হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের যাতায়াত নিরুৎসাহিত করায় কক্সবাজারে বেড়েছে পর্যটক। তাদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
চারদিনের লম্বা ছুটি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে কক্সবাজারে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও হিমছড়ি, ইনানি, দরিয়া নগর পাটুয়ার টেকসহ সবগুলো পর্যটন স্পটে সমাগম ঘটেছে পর্যটকের।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকালে কক্সবাজার সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় নারায়ণগঞ্জে থেকে আসা পর্যটক রহিম আফরোজ, শাহরিয়ার নাফিস ও ইসমামের সাথে।
তারা বলেন, টানা ছুটি পেয়ে ২০ বন্ধু মিলে পরিবার নিয়ে এসেছেন কক্সবাজারে। গরমের এই সময়ে সাগরের পানিতে তাদের ক্লান্তি দূর হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তারা।
সিলেটের বালাগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক নাহিদা, সুমি, ফয়সাল জানান, দেশের চলমান পরিস্থিতির মাঝেও ছুটি পেয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসছেন অনেকদিন পরে। কাজের চাপসহ সব ক্লান্তি ভুলে এখানে সময় পার করছেন তারা।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এস এম কিবরিয়া বলেন, আমাদের মাধ্যমে অনেকেই এসেছেন কক্সবাজারে। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করার কারণে কক্সবাজারে বেড়েছে পর্যটকের আগমন। তবে সেন্টমার্টিন যেতে পারলে আমাদের বুকিং আরো বেড়ে যেত।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল জোন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি কমরেড কলিম উল্লাহ বলেন, শুক্র ও শনিবার সবগুলো হোটেলের শতভাগ বুকিং হয়েছে। বৃহস্পতি ও রবিবার কিছুটা কম। তবে সব মিলিয়ে ভালো ব্যবসা হবে এবার।
কক্সবাজারে সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে। তার মধ্যে স্টার মানের হোটেল রয়েছে অর্ধশত। এসব স্টার মানের হোটেলে শতভাগ বুকিং রয়েছে বলে হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আব্দুল কৈয়ুম চৌধুরী জানান।
নাসিবের সাবেক সভাপতিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলানাসিবের সাবেক সভাপতিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কক্সবাজার রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমাদের প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। অনেকদিন পর সবগুলো রেস্টুরেন্ট খুলে ব্যবসা করছে। মন্দার কারণে আমাদের অনেক রেস্টুরেন্ট এতদিন বন্ধ ছিল। আশা করি এখন থেকে ব্যবসা ভালো হবে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, আমাদের ব্যবসা এখন থেকে আল্লাহর রহমতে ভালো হবে। এবারের ছুটিতে ভালো বুকিং পেয়েছি আমরা সবাই। আশা করি অতীতের লস গুলো কেটে উঠতে পারব।
তারকা হোটেল ওশান প্যারাডাইস লিমিটেডের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের। নিয়মিত ব্যবসা না থাকলে ঋণের উপর প্রতিষ্ঠান চালানো হাতি পোষার মতো। ২০১২ সাল থেকে কোনো না কোনো কারণে ভর মৌসুমেও পর্যটক শূণ্য সময় কাটাতে হচ্ছে। তবে ভ্রমণপিয়াসীদের সেবা দিতে আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকি। এবারের চারদিনের ছুটিতে আমরা ৯৫ শতাংশ বুকিং পেয়েছি। এরপর ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত বুকিং রয়েছে ৮০-৮৫ ভাগ রুম। মৃত প্রায় পর্যটনে সতেজতা ফেরাতে আমরা অধিকাংশ ৪০-৪৫ শতাংশ এবং ক্ষেত্র বিশেষে ৫০ শতাংশ ছাড়ও দিয়েছি। পর্যটকদের ভোজনে ভিন্নস্বাদ দিতে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ উৎসবের আয়োজন রয়েছে। যদিও এর যাত্রা ছিল তিনদিনের। কিন্তু ভোজন রসিকদের জন্য ২০ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। যে কেউ চাইলে স্বল্পমূল্যে ৮ ক্যাটাগরির ইলিশ রান্নার স্বাদ নিতে পারেন।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার আল আসাদ মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম পিপিএম বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আমাদের সাথে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও রয়েছে। আমরা আইটির মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করছি। টহলগুলো অব্যাহত থাকবে সব সময়।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পূজার টানা ছুটিতে কক্সবাজারের বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম হওয়ায়, জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেল থেকে বিশেষ মনিটরিং ব্যবস্থা শুরু হয়েছে। কোনো পর্যটক যাতে হয়রানি শিকার না হয় সে বিষয়টি তদারকির জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের ব্যবস্থা করা হয়েছে।