মকীতে রাস্তায় খোয়া ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

দুমকী
  © টিবিএম

পটুয়াখালীর দুমকীতে হেরিংবন্ড রাস্তা পাকা করতে রাস্তায় ইটের খোয়া ফেলে দুই বছর ধরে লাপাত্তা হয়ে আছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এতে ওই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শ্রীরামপুর, লেবুখালী ও পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষ।

বিকল্প রাস্তা ঘুরে এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ীদের পণ্যসামগ্রী আনা ও নেওয়া করতে তিন গুণ বেশি পরিবহন খরচ গুনতে হচ্ছে।

দুমকী উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ফকির বাড়ি স্ট্যান্ড থেকে কার্তিকপাশা ভায়া ফেদিয়া বাজার পর্যন্ত ১৫'শ মিটার জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি হেরিংবন্ড ছিল। অপর দিকে উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের পূর্ব পাঙ্গাশিয়া মজিদ সিকদারের বাড়ি থেকে গাবতলি বাজার ভায়া নান্নু বিশ্বাসের দোকান পর্যন্ত ১৫'শ মিটার উপজেলা টাউন (নন মিউনিসিপ্যাল) মাস্টার প্ল্যান প্রিপারেশন এন্ড বেসিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে দুটি রাস্তা পাকাকরণে বরাদ্দ দেওয়া হয় দুই কোটি ১৮ লাখ টাকা ১৮ হাজার ৩'শ ৮৮ টাকা। নির্মাণ কাজ পান মেসার্স মহিউদ্দিন আহম্মেদ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ করে রাস্তাটি কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার সময় ছিল ২০২৩ সালের ২৬ মার্চ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুধু মাটি খুঁড়ে এবং কিছু স্থানে খোয়া ফেলে রেখে দিয়েছেন। এক বছর ধরে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে। কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারছে না।

দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়া গ্রামের শিক্ষক এবিএম গোলাম ফারুক বলেন, দীর্ঘদিন রাস্তা মেরামতের কাজটি বন্ধ থাকায় গ্রামের লোকজনের চলাচলের অনেক অসুবিধা হচ্ছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি মেরামতের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

স্থানীয় এছাহাক আলী সরদার ও আবদুস সাত্তার শিকদার বলেন, এই রাস্তা দিয়ে দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, উপজেলা হাসপাতাল, কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা সদরে আসা লোকজনকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। জরুরি রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুর্ভোগের সীমা থাকে না।

লেবুখালী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: খলিলুর রহমানসহ অনেকেই বলেন, আমাদের আগের রাস্তা দিয়ে তবুও চলাচল করতে পারতাম। পাকা রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী অনেক খুশি হয়েছিল। কাজ বন্ধ করে ঠিকাদার উধাও হওয়ায় রাস্তার বেহাল দশায় এখন দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

মেসার্স মহিউদ্দিন আহম্মেদ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাক্টর মো: রিয়াজ হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, যে ইটের ভাটা থেকে আমরা ইট ক্রয় করে করেছি। সে ভাটার রাস্তাটি আসলে খুব খারাপ। এতোদিন বর্ষার কারনে আমরা গাড়ি লোড দিয়ে নিয়ে আসতে পারতেছিলাম না। এখন আবহাওয়া ভালো হয়েছে। আশা করছি অতি দ্রুতই ইট ও মালামাল নিয়ে আসতে পারবো এবং কাজ শুরু করতে পারব। 

উপজেলা প্রকৌশলী সাদ জগলুল ফারুক বলেন, এর আগে আমরা দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য নোটিশ ও করে ছিলাম। চুক্তি অনুযায়ী অনেক আগেই রাস্তার কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। দ্রুত কাজ শুরু না করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।