শায়েস্তাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নেতৃত্বে টোলের নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
- হবিগঞ্জ প্রতিনিধি;
- প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩১ PM , আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩১ PM

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার আলিগঞ্জ বাজারে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে টোল আদায়ের নামে চলছে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। আর এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দিচ্ছেন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শাহেদুল ইসলাম শাহেদ নামে একব্যক্তি। পট পরিবর্তনের পরেও তার নিজস্ব লোক দিয়ে টোলের নামে চালিয়ে যাচ্ছেন এ চাঁদাবাজি।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার তথ্য মনে, ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য ৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৫০০ টাকায় আলিগঞ্জ বাজারের ইজারা নেন শাহেদুল ইসলাম শাহেদ। ইজারার শর্তে দৃশ্যমান স্থানে টোল চার্ট টাঙানো, সরকার অনুমোদিত টোল রেইট অনুযায়ী টোল আদায় এবং রশিদ ব্যাতীত টোল আদায় করা যাবে না উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত টোল হারের কয়েক গুণ বেশি চাঁদা আদায় করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা। এমনকি আলিগঞ্জ বাজার ইজারা নিলেও থানার মোড় এলাকায় পাইকারি কাঁচা বাজার থেকেও আদায় করা হচ্ছে চাঁদা। জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া শাহেদ মামলার এফআইআর ভুক্ত আসামি হলেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং তার লোক দিয়ে এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন চাঁদাবাজি।
রবিবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শায়েস্তাগঞ্জ থানার মোড় এলাকায় জমা (টোল) তুলছেন তারেক মিয়া নামে একব্যক্তি। তিনি নিজেকে শাহেদের প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীক পার্টনার বলে পরিচয় দেন। এসময় তাকে প্রতি মন সবজির জন্য ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে আদায় করতে দেখা যায়। যেখানে পৌরসভা কর্তৃক সরবরাহকৃত টোল চার্টে প্রতি মন ৭ টাকা করে আদায়ের কথা উল্লেখ রয়েছে। এছাড়াও মাংসের প্রতি দোকান থেকে ১৪ টাকা আদায়ের কথা থাকলেও তারা ৬০০ টাকা করে আদায় করছেন।
এ সময় নজরুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি বলেন, প্রতি মন (৪০ কেজি) সবজির জন্য ৩০ থেকে ৪০ টাকা চাঁদা (টোল) দিতে হয় তারেককে। সরকার নির্ধারিত টোলের কোন চার্ট না থাকায় প্রতিনিয়তই বাকবিতণ্ডা হচ্ছে তারেকের সাথে ক্রেতা-বিক্রেতার।
একাধিক ক্রেতা-বিক্রেতা জানান, তারা প্রভাবশালী হওয়ায় বাধ্য হয়ে তাদের চাহিদা মতো টোল দিতে হয় তাদেরকে। একই বিষয়ে আলিগঞ্জ বাজারের মাংস ব্যবসায়ী জলফু মিয়া তালুকদার জানান, মাংসের দোকান প্রতি ৬০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয় ইজারাদার শাহেদকে। এই টাকা আদায় করেন তারেক। কিন্তু তিনি কোন ধরনের রশিদ দেন না। এ নিয়ে আমরা একাধিক বার আপত্তি জানালেও তারা জোরপূর্বক টাকা আদায় করে যাচ্ছেন। এখানে ৩ টি মাংসের দোকান আছে দৈনিক তারা ১৮০০ টাকা আদায় করছে।
অতিরিক্ত চাঁদা আদায়ের বিষয়ে তারেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মাংসের দোকান থেকে ৬০০ টাকা করে আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করলেও সবজি বাজার থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। একই বিষয়ে ইজারাদার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শাহেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ও তার লোকজন অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন না বলে দাবি করেন। শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা আক্তার মিতা বলেন, আমি তো রিসেন্টলি পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।