ফসলের ক্ষেতে কাটুই পোকার আক্রমণ, দুশ্চিন্তায় কৃষক 

ফেনী
  © সংগৃহীত

ফেনীতে সম্প্রতি বন্যার পর কৃষকের নতুন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফসল বিনাশী কাটুই পোকা বা ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ। জেলার সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ, নবাবপুর এবং ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ও মুন্সীরহাটের বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমি, জলাশয়সহ বিভিন্ন স্থানে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার অস্বাভাবিক উপদ্রব দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছে বন্যার পানিতে ভেসে বা বন্যা পরবর্তী দেশের বিভিন্ন স্ংগঠনের সহায়তা হিসেবে আসা চারা গাছ থেকে এ পোকা এসেছে বলে ধারণা তাদের। 

সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউনিয়নের সোহরাব হোসেন বলেন, কালো রঙের এ পোকা ফসলের মাঠে, রাস্তায়, বাড়িঘর ও আশপাশের বন-জঙ্গলসহ সর্বত্র বিচরণ করছে। শীতকালীন সবজি ও আমনে ক্ষেতে এ পোকার আক্রমণে ব্যাপার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

একই উপজেলার চর কৃষ্ণজয় গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, আমার ৫৫ বছরের জীবনে কৃষি ক্ষেতে এ পোকার এত আক্রমণ কখনো দেখিনি। ৮০ শতাংশ জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি। জমির পাশাপাশি এ পোকা এখন বাড়িঘরেও ঢুকে পড়েছে। এভাবে ফসলের এ পোকার আক্রমণ দমন করতে না পারলে মাঠের ফসল ঘরে তোলা যাবে না।
জেলা কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ফল আর্মিওয়ার্ম পোকা পানিতে থাকতে পারে না। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান এ পোকা পানির উপর দিয়েই চলতে পারে। ফল পুকুর, ডোবা বা জলাশয় ও ধানের ক্ষেতে পানিতে অবাধেই বিচরণ করছে এ পোকা।
সোনাগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন বলেন, এ পোকার উপদ্রব ঠেকাতে কীটনাশক নাইট্রো ও কোরাজেন মিশ্রণ করে স্প্রের মাধ্যমে পোকা দমন করা হয়। এ ব্যাপারে ফসল রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পোকা দমনে ইউনিয়ন পর্যায়ে আমাদের টিম কাজ করছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় গত ২৪ অক্টোবর প্রথমবারের মতো ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার উপদ্রব সম্পর্কে অবগত হয়েছি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন এবং বিভিন্ন বালাইনাশক কোম্পানির প্রতিনিধিদের এতে যুক্ত করা হয়েছে। ফসলে বিভিন্ন বালাইনাশক প্রয়োগের বিষয়ে কৃষকদের‌ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া পোকার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের জমিতে আলোর ফাঁদ বসানোর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।