নিষ্ক্রিয় পুলিশ, কুমিল্লায় সড়কে ১০ হাজার অবৈধ অটোরিকশার অনুপ্রবেশ

কুমিল্লা
  © ফাইল ফটো

কুমিল্লায় ট্রাফিক পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় নগরীতে আরও ১০ হাজার অবৈধ অটোরিকশার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। ৫ আগস্টের পর নগরীর বাইরে থেকে এসব অটোরিকশা আসে। এতে সড়কে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত যানজটে নাকাল হচ্ছেন বাসিন্দারা। নগরীর কোনো কোনো সড়কে পায়ে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, নগরীতে বৈধ-অবৈধ মিলে ৩০ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও নানা ধরনের থ্রি-হুইলার ছিল। এতেই নগরবাসী দিনভর যানজটের কবলে থাকতেন। জেলা প্রশাসন, ট্রাফিক পুলিশ, বিআরটিএ ও নগর কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে গঠিত ‘যানজট নিরসন কমিটি’র নানামুখী তৎপরতায় কোনোরকম চলছিল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ট্রাফিক পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় নগরীর সড়কে হযবরল অবস্থা তৈরি হয়। অনেকটা অচল হয়ে পড়ে ট্রাফিক ব্যবস্থা। এ সুযোগে নগরীর আশপাশের উপজেলা থেকে প্রায় ১০ হাজার অবৈধ মিশুক ও অটোরিকশা ঢুকে পড়ে। এসব অবৈধ যানবাহন দখলে নেয় নগরীর বিভিন্ন সড়ক।

এদিকে যানজট নিরসনে বছরখানেক আগে কুমিল্লা নগরীতে ৬ সিটের অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। প্রতিটি সড়কে সীমিত সংখ্যক প্রয়োজনীয় অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। ট্রাফিক বিভাগ কোন সড়কে কী পরিমাণ থ্রি-হুইলারের চাহিদা রয়েছে, সেটি নির্ধারণ করে দেয়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বহু থ্রি-হুইলার শহর থেকে বের করে দেওয়া হয়। সেসময় রাজনৈতিক সিন্ডিকেটের চাঁদাবাজির কারণে এ শৃঙ্খলা বেশিদিন ধরে রাখতে পারেনি যানজট নিরসন কমিটি। কিন্তু সরকার পতনের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে সব নিয়ম ভেঙে ফেলেছেন থ্রি-হুইলার চালকরা।

নগরীর ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন সড়কে হেঁটে চলাচল করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। দিনভর যানজট লেগে থাকে।

রানিরবাজারের বাসিন্দা ইমরান আহমেদ বলেন, প্রতিটি সড়কেই অটোরিকশার জটলা। সড়কের একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়া যায় না।

কুমিল্লা জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইনস্পেকটর (অ্যাডমিন) কামাল পাশা বলেন, ৫ আগস্টের পর নগরীতে ১০-১২ হাজার অটোরিকশার অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সিটি করপোরেশন যদি অটোরিকশার সংখ্যা নির্ধারণ করে দিত, তাহলে আমরা সে অনুসারে পদক্ষেপ নিতাম। তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক বৈধ-অবৈধ যানবাহন স্বল্পসংখ্যক ট্রাফিক পুলিশ দিয়ে সামলানো খুবই কঠিন। এসব অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আমরা কিছু কিছু অভিযান পরিচালনা করছি। কিন্তু তাতেও তেমন একটা রেজাল্ট আসছে না।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিপি চৌধুরী বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ যানজট নিরসন করা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় আলোচনা করব।

জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বলেন, নগরীতে অটোরিকশার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। আমরা সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত থ্রি-হুইলারগুলোকে শহরের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেব।