কলঙ্ক মুক্ত হল ট্রাক ড্রাইভার, ২৯দিন পর সুচতুর চোরদের ধরল পুলিশ

রংপুর
  © টিবিএম

নিজের ট্রাক নিজেই চালান আরিফুল, অদ্য ৩১/১০/২৪ তারিখ ২৫০ বস্তা ভুট্টা ভাড়া ঠিক করেন নীলফামারীর সদর উপজেলার পলাশবাড়ী এলাকা থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ডেলিভারি দেবেন মর্মে। নীলফামারী থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ভুট্টা গাড়িতে উঠিয়ে হেলপার আব্দুল হালিমসহ রওনা করেন। পথিমধ্যে তারাগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের দোয়ালিপাড়ায় নিজ বাড়িতে গিয়ে ফ্রেস হওয়ার জন্য আরিফুল সোনালী পেট্রোল পাম্পের পাশে গাড়ি ব্রেক দেন। হেলপার আব্দুল হালিমকে গাড়ি পরিষ্কার করার কথা বলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বাড়িতে গিয়ে আরিফুল ফ্রেস হতে হতে অসুস্থতা অনুভব করলে বিছানায় গা এলিয়ে দেন। বিপত্তি ঘটে এর পরেই। 

পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ১০ টায় ট্রাকের কাছে এসে দেখেন গাড়িতে কোন মাল নেই। হেলপার আব্দুল হালিমও গায়েব, তার মোবাইলও বন্ধ। দিশেহারা হয়ে যায় আরিফুল। ওদিকে ভুট্টা যারা পাঠিয়েছে তারাও ফোন দিয়ে মাথা খারাপ করে দিচ্ছেন। সন্দেহের তীর তার দিকেই যাচ্ছে। ট্রাক মালিক ও ড্রাইভার থেকে এক মুহূর্তেই গায়ে লেগে যায় ভুট্টা চুরির তকমা।

এরপর সোনালী পেট্রোল পাম্পের সিসি ফুটেজ বিশ্লেষণ শুরু হয়। দেখা যায় হেলপার আব্দুল হালিম ওইদিন লাল টি শার্ট পরে রাত্রি ১০ টার পরে ট্রাক ভর্তি ভুট্টার গাড়ি পাম্প থেকে বের করে সৈয়দপুরের দিকে টান দেয়। এরপর ওইদিন রাত্র ২.৩০ টায় খালি ট্রাক এনে যথা স্থানে রেখে সটকে পরে।

আরিফুল ইসলাম পারভেজ উপায়ন্তর না পেয়ে থানায় একটি চুরির মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তভার পরে তারাগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল লতিফের ঘাড়ে। দীর্ঘ ২৯ দিন হন্যে হয়ে চোর খোঁজাখুঁজি করেন। অবশেষে জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার নন্দীগ্রামের আলেফ উদ্দিনের ছেলে আব্দুল হালিমকে (২৯) ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার বেংগলের মোড় এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন এস আই আব্দুল লতিফ। এরপর তার তথ্য মতে, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার বেলাইচন্ডি ডাঙ্গাপাড়ার এলাকা থেকে রবিউল ইসলামের ছেলে আসাদুজ্জামান নুর (৩০) কে গ্রেফতার করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হালিম জানায়, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার টিকিয় পাড়া মোড় (বালুর চর) এলাকায় জনৈক এক ব্যক্তির কাছে ৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চুরি করে নিয়ে যাওয়া ভুট্টা বিক্রি করে আসাদুজ্জামান নূরের সহযোগিতায়। আসাদুজ্জামানই মূলত পার্টি জোগাড় করে দেয় আব্দুল হালিমকে।

এস আই আব্দুল লতিফ জানান, আরিফুল ইসলাম পারভেজের মামলার চোরদের ধরতে বিশেষ বেগ পেতে হয়। কারণ আসামিরা ছিল খুবই ধুরন্ধর প্রকৃতির ও অবস্থান নিয়মিত পরিবর্তন করত। দীর্ঘ দিন সোর্সিং করে ঢাকা জেলা থেকে ১ জনকে ও দিনাজপুর জেলা থেকে ১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) আসামিদের কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে।

চুরি মামলার বাদী আরিফুল ইসলাম পারভেজ জানান, অবশেষে আমার কলঙ্ক মুক্ত হল। আসামিরা শিকার করেছে তারা চুরি করে কোথায় কত টাকার বিনিময়ে ২৫০ বস্তা ভুট্টা বিক্রি করছে। আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার যেন পাই, সেই প্রত্যাশা করছি।