রেলওয়েতে এক কর্মচারীর ৭ মাস ধরে বেতন ভাতা বন্ধ, নেপথ্যে পিডাব্লিআই সাইফুল্লাহ রিয়াদ
- নিজস্ব প্রতিবেদক;
- প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ PM , আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ PM
রেলওয়ে কর্মকর্তাদের দূর্নীতি ও অনিয়মকে ধামাচাপা দিতে, কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রে রেলওয়ে এক কর্মচারীর ৭মাস ধরে বেতন বন্ধ। করতে দেয়া হচ্ছে না চাকরি এবং কর্মচারীর সার্ভিসবুক সহকারী নির্বাহি প্রকৌশলী আখাউড়া গুম করে পেলেছেন। কর্মচারীর নাম, জুনায়েদ মিয়া, পিতাঃ আব্দুল জলিল, মাতাঃ জয়ফুল বেগম। সে ০২-০৯-২০১৯ ইং তারিখে বাংলাদেশ রেলওয়ে, এসএসএই/ওয়ে/ শায়েস্তাগঞ্জ সেকশনে ০৩ নং গ্যাং এ স্থায়ী ওয়েম্যান পদে যোগদান করেন।
নিজ কর্ম দক্ষতায় কর্তৃপক্ষের সন্তুষ্টি অর্জন করায় তৎকালীন সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আক্তার খাঁন ২২-১০-২০১৯ ইং তারিখে, জুনায়েদ মিয়া কে ভারপ্রাপ্ত কিম্যান পদে দায়িত্ব প্রদান করেন, যার দপ্তরাদেশ নং (ও/১-৬২১) এবং দীর্ঘদিন কিম্যান এর দায়িত্ব পালন করার পর, কর্তৃপক্ষ আবারো তার কাজের দক্ষতায় খুশী হয়ে ২১-০৪-২০২০ ইং তারিখে দপ্তরাদেশ নং (ও/১-৬২৯) তৎকালীন সহকারী নির্বাহি প্রকৌশলী, বর্তমান বিভাগীয় নির্বাহি প্রকৌশলী ২ ঢাকা, এসএম মাহমুদুর রহমান তাকে ভারপ্রাপ্ত কার্পেন্টার হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করেন, দীর্ঘদিন চাকুরিতে দায়িত্ব পালন চলাকালীন কখনো তার অনুপস্থিতি ছিলনা। খুবই মনোযোগ দিয়ে , তিনি ওনার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন, হঠাৎ শারীরিক অসুস্থ হওয়ায় ২০-০২-২০২৩ তারিখে পিডাব্লিউআই সাইফুল্লাহ রিয়াদ এর বরাবর ৪দিনের ছুটি চেয়ে একটি দরখাস্ত দেন। কিন্তু অনেক অনুরোধ করার পরও তাকে ছুটি দেন নাই, সিক চেয়েছিলো সিক ও দেন নাই।
তারপর ২১-০২-২০২৩ তারিখ হতে তাহাকে এভসেন্ট দেখানো হয়, বন্ধ হয়ে যায় তার বেতন, সে রয়ে যায় সুস্থ হওয়ার জন্য চিকিৎসাধীন। তারপর ২০-১০-২০২৩ ইং তারিখে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে মেডিকেল ফিট সনদ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার কাগজ পত্র দিয়ে চাকুরিতে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন মনোযোগ দিয়ে চাকুরি করার পরে ৩১-০৩-২০২৪ ইং তারিখ হতে ০৩ -০৪-২০২৪ তারিখ পর্যন্ত ৪ দিনের সিএল ছুটি নেন। ছুটি শেষ করে কর্মস্থলে আসার পর পিডাব্লিউআই সাইফুল্লাহ রিয়াদ তাকে মৌখিক ভাবে বলেন, তার নাকি ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে, তৎকালীন বিভাগীয় প্রকৌশলী২ ঢাকা, সিরাজ জিন্নাত বদলি অডার করেছেন। জুনায়েদ মিয়া বদলি অডার এর দপ্তরাদেশ ও ছাড়পত্র চাইলে কোনটাই তাকে দেন নাই। এভাবেই তাকে বসিয়ে রাখা হয় চাকুরি থেকে, বার বার অফিসে যোগাযোগ করা হলেও, তাকে কোন বদলি অডার এর কাগজ দেন নাই। বদলি অডার এর কাগজ ও ছাড়পত্র না পাওয়াতে সে জানেনা তার কি সত্যিই বদলি অডার হয়েছে, নাকি তার সাথে নতুন কোন ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
তৎকালীন সহকারী নির্বাহি প্রকৌশলী মেহেদি হাসান তারেক উনার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও বদলি অডার এর কোনো কাগজ দেন নাই। এবং জুনায়েদ এর বাসার ঠীকানায় ডাকযোগেও কোনো কাগজপত্র পাঠানো হয় নাই। কিছুদিন পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভাগীয় প্রকৌশলী ২ সিরাজ জিন্নাত সাক্ষরিত একটি বদলি অডার এর ১টি কপি ফেইসবুকে দেখা যায়। কিন্তু সে দপ্তরাদেশ এ জুনায়েদ মিয়ার নাম ও অফিসিয়াল নাম পদবীর কোনো মিল না থাকাতে জুনায়েদ মিয়া নিশ্চিত নয় যে সেটা জুনায়েদ এর অডার কি-না। ষড়যন্ত্র করে তাকে চাকরি থেকে বসিয়ে রেখে তাৎক্ষণিক তারা তাড়াহুড়া করে বাঁদল খান নামে একজনকে কার্পেন্টার ও সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত যার চাকুরিতে যোগদান এর ৩ মাস হয়নি, বিজন কুমার দাসকে ভারপ্রাপ্ত ব্লাকস্মিথ পদে দায়িত্ব দেন এইএন মেহেদি হাসান তারেক।
সুত্র মতে জানা যায়, ২০২০ সালের নিয়োগ বিধী অনুযায়ী, ৩য় শ্রেনীর কোন ভারপ্রাপ্ত অডার এইএন করতে পারেন না। ৩য় শ্রেনীর ভারপ্রাপ্ত দপ্তরাদেশ বিভাগীয় প্রকৌশলী কর্তৃক করতে হয়। কিন্তু মেহেদি হাসান তারেক কিসের বিনিময়ে এই অবৈধ অডার করেছেন, তা শ্রমিকদের মনে প্রশ্ন। নির্যাতিত শ্রমিক জুনায়েদ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওনার কোনো বদলি দপ্তরাদেশ হয়েছে কি না তা তিনি জানেন না, তিনি কোন বদলি অডার বা ছাড়পত্র এখনো পান নাই। কর্তৃপক্ষ এসব মৌখিক ভাবে শুধু বলেন, কিন্তু কোন অফিসিয়াল কাগজ পত্র দেন নাই। জুনায়েদ বলেন আমার জায়গায় বাঁদল খান ও সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত একটি ছেলে বিজন কুমার দাসকে চাকুরিতে যোগদান এর ৩ মাসের ভিতরে ব্লাকস্মিথ পদে প্রমোশন দেয়ার লক্ষে বাঁদল খাঁন ও বিজন কুমার এর কাছ থেকে বড় অঙ্কের সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার জন্যই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চাকুরি থেকে বসিয়ে রাখেন পিডাব্লিউআই সাইফুল্লাহ রিয়াদ ও এইএন মেহেদি হাসান তারেক। তারা আমাকে বিনা কারনে চাকুরি করতে দিচ্ছেন না, বেতন দিচ্ছেন না, বর্তমানে উনারা দুজন বদলি হয়ে গেছেন। নতুন পিডাব্লিউআই ফিরোজ গোলজার মহোদয় ও আমাকে যোগদান দিতে দিচ্ছেন না, বিভাগীয় প্রকৌশলী ২ ঢাকা এসএম মাহমুদুর রহমান স্যার বরাবর লিখিত আবেদন করার পর তিনিও সমাধান দিচ্ছেন না।
জিএম পূর্ব মহোদয় এর স্বরনাপন্ন হয়ে বিষয় গুলি অবগত করা হলে, তিনি সমাধানের আশ্বাস দিলেও, সমাধান হচ্ছে না। মূলত পিডাব্লিউআই সাইফুল্লাহ রিয়াদ এর বিরুদ্ধে অনেক শ্রমিক ও সাধারন ছাত্ররা অভিযোগ করে, তার দূর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা নিরিহ শ্রমিকরা ২ বছর ধরে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করি। তার দূর্নীতিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমাকে চাকুরি করতে দেয়া হচ্ছে না। সাইফুল্লাহ রিয়াদ ৩ কোটি টাকা দূর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন আরো কয়েকজন কর্মকর্তা, তদন্তে তাদের নাম প্রকাশ হতে পারে। সেজন্য তারা আমাকে কর্মস্থলে চাকুরি করতে দিচ্ছেন না। এবং আমার বেতন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, বর্তমানে আমি আমার পরিবার নিয়ে খুব খারাপ অবস্থায় দিন পার করছি। কোনো জায়গায় সমাধান না পেয়ে, আমার উপর অন্যায় ভাবে যে ৪জন কর্মকর্তা অবৈধ স্বৈরাচারীতা করেছেন, তাদের ৩ কোটি টাকার দূর্নীতি সহ অন্যান্য সকল দূর্নীতির বিষয় উল্লেখ করে দেশের সম্পদ রক্ষার্তে এবং আমার চাকুরিতে যোগদান ও অবৈধ ভাবে আমার বেতন বন্ধ করে দেয়ার জন্য আমি মহামান্য হাইকোর্ট ও দূর্নীতি দমন কমিশনে মামলা দায়ের করবো। যেহেতু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সমাধান করেন নাই, সেহেতু আমার বিশ্বাস মহামান্য আদালত আমার সমস্যার সঠিক সমাধান করিতে পারেন এবং দেশের সম্পদ রেলওয়ের সম্পদ রক্ষা ও উদ্ধার করতে পারেন।