ভ্যাট বৃদ্ধির প্রতিবাদে সংবাদ সন্মেলন করেছেন যশোর চেম্বার অব কমার্স
- অমল কৃষ্ণ পালিত,যশোর জেলা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫১ PM , আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫১ PM

দেশে অসংখ্য ব্যবসায়ী রয়েছেন যাদের ভ্যাট দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু তারা ভ্যাটের আওতায় নাই। তাদেরকে ভ্যাটের আওতায় এনে দেশকে অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যান। আমরা নিয়মিত ভ্যাট দিচ্ছি, আমাদের ঘাড়ের উপর ভ্যাটের বোঝা আর বাড়াবেন না।
বর্তসমান রকারের সাম্প্রতি ভ্যাট বৃদ্ধি অযৌক্তিক দাবি করে যশোর চেম্বার অব কমার্সের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন সংগঠনের সভাপতি মিজানুর রহমান খান। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তানভীরুল ইসলাম সোহানের সঞ্চালনায় (১৩ জানুয়ারি) সোমবার দুপুরে সংগঠনের নিজ কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শত পন্যের ভ্যাট বৃদ্ধির তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিজানুর রহমান খান বলেন, ৯ জানুয়ারি নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য ও সেবার ওপর ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এতে ওষুধ, এলপিজি, রেস্তোরাঁর খাবার, মোবাইল ফোন সেবা, ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে।
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘উচ্চ মূল্যস্ফীতি জনগণের জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। এর ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে তিনি বলেন, ‘অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা ভ্যাট দেন না। কিন্তু তাদের ভ্যাট দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। সরকার তাদের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ের ব্যবস্থা করতে পারে। এতে করে ভোক্তার উপর তেমন প্রভাব পড়বে না’ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এসময় চেম্বারের নেতারা দাবি করেন, ভ্যাট বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে নেয়ার ফল। এতে দেশের অর্থনৈতিক নীতি প্রণয়নের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন মোবাইল রিচার্জ ও ইন্টারনেট ব্যবহারে কর বেড়ে গেছে। আপেল, কমলা ও মাল্টার ওপর কর ভার বেড়েছে ১৫ টাকা। ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের করভার বেড়েছে ৭ টাকা। এমনকি এক প্যাকেট ফ্রেসিয়াল টিস্যুর কর চার টাকা বেড়ে ৭-৮ টাকা দাঁড়িয়েছে।
ব্যবসায়ীরা ভ্যাট বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন এবং অর্থনৈতিক নীতির স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, যুগ্ম সম্পাদক মকছেদ আলী ও এজাজ উদ্দিন টিপু, ব্যবসায়ী নেতা সঞ্জয় চৌধুরী, এস কে আজাদ প্রমুখ।
এসময় ব্যবসায়ীরা বলেন, জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্থলে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর জনকল্যাণমুখী অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আইএমএফের শর্ত মেনে নেয়া এবং পূর্ববর্তী সরকারের বাজেট বহাল রাখায় সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। চলমান পরিস্থিতিতে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধির কারণে দেশের অর্থনীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি, তাদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা এ সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।