হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ

কালাই
  © টিবিএম ফটো

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়ক। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ কৃষক একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভকারীরা হিমাগারের বাড়তি ভাড়া বাতিল করে পূর্বের হার বহাল রাখার দাবি জানান এবং এ বিষয়ে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহানের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হিমাগারের ভাড়া অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে কৃষকদের সংকটে ফেলে দেওয়া হয়েছে।এতে বিশেষ করে প্রান্তিক কৃষকরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন,যার প্রভাব পুরো অর্থনীতিতে পড়বে। কৃষকরা জানায়, এ বছর আলু উৎপাদনের খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে। বীজ, সার, কীটনাশকসহ অন্যান্য উপাদানের মূল্য আগের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় এমনিতেই তারা লোকসানের মুখে।তার ওপর হিমাগারের ভাড়া দ্বিগুণ বৃদ্ধি করায় কৃষকদের জন্য আলু সংরক্ষণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

গত বছর ৭০ কেজির আলুর বস্তা সংরক্ষণের ভাড়া ছিল ২৮০ টাকা,যা এ বছর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬০ টাকা। কৃষকরা বলছেন,এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে,যাতে তারা কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হন এবং পরে হিমাগার মালিকরা সেই আলু মজুদ করেউচ্চমূল্যে বাজারে বিক্রি করতে পারেন।

বিক্ষোভ চলাকালে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং হিমাগার মালিকদের স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,যদি দ্রুত ভাড়া কমানো না হয়, তাহলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

কালাই উপজেলার আলুচাষি আব্দুল হান্নান বলেন," ১১টি কোল্ড স্টোরেজে প্রায় ৯ লাখ বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়। এক বস্তা থেকে ২৮০ টাকা বেশি লাভ করলে, পুরো মৌসুমে হিমাগার মালিকরা প্রায় ২৫ কোটি ২০ লাখ টাকা কৃষকদের পকেট থেকে নিয়ে নেবে। এই সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে।"

আরেক আলুচাষি ফজলুল করিম অভিযোগ করেন,হিমাগার মালিকদের উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে না পারলে তারা কম দামে আলু কিনবে এবং পরে বেশি দামে বিক্রি করবে। এটা হতে দেওয়া হবে না।"

উপজেলা সমন্বয়ক নেওয়াজ মোরশেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,"দেশের কৃষকরা এমনিতেই সংকটে রয়েছে। তার ওপর এই অন্যায্য ভাড়া বৃদ্ধি তাদের আরও বিপদে ফেলছে। হিমাগার মালিকরা নিজেদের স্বার্থে কৃষকদের সর্বস্ব লুটতে চাইছে, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।"

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক এহসান আহমেদ নাহিদ বলেন,"এই ভাড়া বৃদ্ধি সরাসরি কৃষকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যদি অবিলম্বে মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুরো জেলা অচল করে দেওয়া হবে।"