সিলেটে বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে যাচ্ছে সেনাবাহিনী
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ১০:২১ AM , আপডেট: ১৭ জুন ২০২২, ১১:২৫ AM

ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির শিকার সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলা। সিলেটের গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটেছে। বন্যার পানিতে আটকে পড়েছে অনেকে। এবার বন্যায় আটকে পড়াদের উদ্ধারে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। এমনটাই জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যাঁদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তাঁদের আশ্রয়কেন্দ্রে নতুবা নিরাপদ স্থানে চলে আসতে বলা হচ্ছে। খাদ্যসংকট দূর করতে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। সেনাবাহিনী দ্রুত উদ্ধার তৎপরতা শুরু করবে।
জানা গেছে, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে কোমর পানি। সরকারি দপ্তরে কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। ঢল অব্যাহত থাকায় ৬টি ইউনিয়নের ৮০ ভাগ এলাকা পানির নিচে। প্রায় অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানিবন্দি মানুষজন অনাহারে-অর্ধাহারে বসবাস করছেন। পার্শ্ববর্তী গোয়াইনঘাটের সঙ্গে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ দু’দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সালুটিকর-গোয়াইনঘাট, সারি-গোয়াইনঘাট এবং জাফলং-গোয়াইনঘাট সড়কে কোমর পানি। এ কারণে কোনো ধরনের যানবাহনই চলাচল করতে পারছে না। গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরেও হাঁটু পানি। এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট এলাকায় পানিতে আটকে পড়াদের উদ্ধারে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলেও যেসব এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি থাকলেও রাতের মধ্যে তা বেড়ে গলাসমান হয়ে গেছে। ফলে আজ শুক্রবার সকালে অনেক মানুষকে ঘরের চালায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় সেখানেও তাঁরা থাকতে পারছেন না। নৌকা না থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রেও যেতে পারছেন না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর দুটি ও কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সারি নদের একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও ক্রমশ বাড়ছে বলে পাউবোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বানভাসি মানুষ জানান, বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় অনেকে বাড়িঘরে আটকা পড়েছেন। তাঁরা এ অবস্থা থেকে উদ্ধার চান। এ ছাড়া অনেক বন্যার্ত খাবার ও পানির সংকটে সবচেয়ে বেশি পড়েছেন। ঘরে হাঁটু থেকে গলাসমান পানি ওঠায় অনেকে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। অনেকে ত্রাণও পাচ্ছেন না। এতে তৈরি হয়েছে চরম মানবিক বিপর্যয়। পানি যত বাড়ছে, সংকটও তত বাড়ছে।
এদিকে জেলার জৈন্তাপুরে বন্যা পরিস্থিতি আরও প্রকট হচ্ছে। সারি নদীর ঢলে প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ঢল অব্যাহত থাকায় সিলেট-তামাবিল সড়কও রয়েছে হুমকির মুখে। কানাইঘাট উপজেলা সদরে কোমর পানি। বুধবার রাতে সুরমার ডাইক উপচে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর, বিশ্বনাথে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।