তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ০৪:৫৮ PM , আপডেট: ১৭ জুন ২০২২, ০৪:৫৮ PM

বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে নীলফামারীতে। ফলে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপৎসীমার ওপরে আর নদী অববাহিকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত।
শুক্রবার (১৭ জুন) সকাল ৯টা থেকে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী অববাহিকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পাউবোর গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) মো. নুরুল ইসলাম জানান, আজকে গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৮ মিলিমিটার।
সূত্র থেকে জানা যায়, গতকাল বিকাল ৩টায় পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছিল (৫২ দশমিক ৫২)। আবার সন্ধ্যা ৬টায় তিন সেন্টিমিটার বেড়ে ৫২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়। আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ডিমলা, জলঢাকা ও লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ, হাতিবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার চর গ্রামসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে ডিমলা উপজেলার কিছামত ছাতনাই, ঝাড় শিঙ্গেশ্বর, চর খড়িবাড়ি, পূর্ব খড়িবাড়ি, পশ্চিম খড়িবাড়ি, তিস্তা বাজার, তেলির বাজার, বাইশপুকুর, ঝুনাগাছ চাঁপানীর ছাতুনামা কেল্লাপাড়া, ভেন্ডাবাড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী এলাকায় পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখানকার লোকজন গরু-ছাগল নিয়ে নিরাপদে সরে যাচ্ছে। এতে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। তিস্তার চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে হাঁটুপানি জমেছে। বসত বাড়িতে রান্না করে খাওয়ার পরিস্থিতি নেই।
উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘অনবরত বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে বন্যার পানি প্রবেশ করায় ইউনিয়নের ছাতুনামা কেল্লাবাড়ি, ভেন্ডাবাড়ি এলাকার পাঁচ হাজার পরিবার বন্যায় কবলিত হয়েছে।’
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান জানান, উজানের ঢল বাংলাদেশে প্রবেশ করায় আগাম বন্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একই উপজেলার খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন জানান, একদিকে উজানের ঢল, অন্যদিকে অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। গরু-ছাগল ও বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছে। কিসামত ছাতনাই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট (জলকপাট) খুলে তিস্তা অববাহিকার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা সতর্ক রয়েছি। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বন্যাকবলিত পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’