সিলেট পানির নিচে, ঢাকায় জালালাবাদ সমিতির উৎসবমুখর আয়োজন!

বন্যা
জালালাবাদ সমিতির উৎসবমুখর নির্বাচন  © সংগৃহীত

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যার কবলে সিলেট বিভাগ। বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার। সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ এখন বাঁচার জন্য লড়ছে। অনেকে অভুক্ত, কেউ আধা পেট খেয়ে আছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তীব্র। বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে গবাদিপশু। মানুষও নিখোঁজ হচ্ছে। খাদ্য, সুপেয় পানি আর চিকিৎসার সামগ্রী দ্রুত পৌঁছানো না গেলে সেখানকার মানুষ আরও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে, এমন আশঙ্কা সবারই।

এদিকে, সিলেটে এমন দূর্ভোগের মধ্যেই ঢাকায় চলছে উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকাস্থ সিলেটবাসীদের সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।

আজ শনিবার (১৮ জুন) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবন্ধ ছিল না, সেখানে উৎসবমুখর পরিবেশে খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই নির্বাচনের একজন ভোটার জানিয়েছেন, সরকার যেখানে এসএসসি পরীক্ষাসহ বেশ কিছু বড় বড় কর্মসূচি বাতিল করেছে। অথচ আমরা সিলেটের মানুষ হয়েও এই দূর্ভোগের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন বন্ধ করতে পারিনি। কিন্তু  দূর্ভোগের সময়ে নির্বাচন স্থগিতের পক্ষে অনেকে থাকলেও সংগঠনের কিছু নেতার কারণে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি বলেও তিনি জানিয়েছেন। 

এ বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা কয়েকটি স্ট্যাটাস হুবহু তুলে দেয়া হলো: 

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি সদস্য সাঈদ খান শাওন লিখেছেন, আমার সিলেট, সুনামগঞ্জ বাসী যখন বন্যার পানির নিচে, আমার সিলেট-সুনামগন্জ বাসী যখন না খেয়ে আছে, আপনাদের ঐ জালালাবাদ এসোসিয়েশন এর নির্বাচন নামক কান্ডজ্ঞানহীন আচরণ কে ধিক্কার জানাই। আপনাদের বিবেক কি মরে গেছে??

সাংবাদিক সানাউল হক সানী লিখেছেন, সিলেটের মানুষকে আমরা তুলনামূলক মানবিক ভাবি সবসময়ই। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে, সারা দেশের মানুষ যখন সিলেট নিয়ে উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত। তখন ঢাকায় চলছে উৎসবমুখর পরিবেশে ঢাকাস্থ সিলেটবাসীদের সংগঠন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচন। একটা নির্বাচন স্থগিত করে মানুষের এই অসহায়ত্বের সময় পাশে দাঁড়াতে পারে না তারা। আদৌ মানুষের কি কল্যাণটা করবে! যার বিয়ে তার খবর নাই, পাড়া পড়শীর ঘুম নাই- বিষয়টা এমন হয়ে গেল..

দেবাশীষ সামন্ত নামে একজন একটি পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন, এই এসোসিয়েশনকে জবাবদিহিরতার আওতায় আনতে হবে। প্রোজনে আন্দোলন করতে হবে। সিলেটের নাম ভাঙিয়ে যারা নিজেদের পকেট ভারী করায় ব্যস্ত তাদেরকে দাতভাঙা জবাব দিতে হবে।

সৈয়দ সোহেল নামের একজন লিখেছেন, ধিক্কার জানাই জালালাবাদ এসোসিয়েশন কে!! আজ থেকে ঘৃণাভরে জালালাবাদ এসোসিয়েশন কে বয়কট করলাম।

অপরদিকে, ওই এলাকায় বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও জরুরি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়ার জন্য করছে সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি শনিবার থেকে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস যুক্ত হয়েছে।