১২২ বছরের ইতিহাসে সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা

টানা বৃষ্টি আর ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষ। সর্বত্রই পানি আর পানি। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে এরই মধ্যে সিলেট বিভাগের প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা পুরোপুরি তলিয়ে গেছে। সবমিলিয়ে বর্তমানে পানিবন্দি প্রায় ৫০ লাখ মানুষ। 

সিলেট ও সুনামগঞ্জে যে বন্যা চলছে তা ১২২ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান। তিনি বলেছেন, দেশের দশ জেলার ৬৪ উপজেলা বন্যার কবলে পড়েছে। 

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (১৮ জুন) বিকালে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এনামুর রহমান বলেন, ১৬ ও ১৭ জুন ৪ ফুট করে ৮ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করা হচ্ছে মঙ্গল ও বুধবার থেকে পানি কমে সিলেট ও সুনামগঞ্জে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড যৌথভাবে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, উদ্ধার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনী কার্যক্রম চালাবে। সেই সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণসহ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে।

কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা কবলিত ১১ জেলাতেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে। আর তিস্তার পানি এ সময়ে বিপদসীমার কাছাকাছি বা উপরে অবস্থান করতে পারে।

এদিকে ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের প্রধান নদীগুলোর পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, অবিরাম বৃষ্টিপাতের মধ্যে ভূমিধস ও অন্যান্য ঘটনায় রাজ্য দুটিতে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ১৯৯৫ সালের পর থেকে জুন মাসের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।

আর ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় গেল ৬০ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। ফলে উজানের পানিতে দেশের হাওরাঞ্চলীয় জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে আশঙ্কা রয়েছে।