গাইবান্ধায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২১ জুন ২০২২, ১১:৪৯ AM , আপডেট: ২১ জুন ২০২২, ১১:৪৯ AM

ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকা। ক্রমশ অবনতি হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির। জেলার সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন জেলার প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত অপারেটর খায়নুর নাহার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঘাঘট নদীর পানি শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও যমুনার পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ও করতোয়ার পানি এখনো নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির পাট, বাদাম, তিল, কাউনসহ বিভিন্ন শাকসবজি। তবে কী পরিমাণ জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই জেলার কৃষি বিভাগে। বাড়িঘরে পানি উঠায় অনেক পরিবার তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এরই মধ্যে সরকারিভাবে সদরে ২টি ও সাঘাটা উপজেলার ১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে ৪০০ শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকায় যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে দুর্গত এলাকার মানুষরা তাদের গবাদি-পশু নিয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন।
জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসনের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার এস এম ফয়েজ উদ্দিন বলেন, চার উপজেলার বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য ৮০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে তালিকা করে এসব চাল বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮ হাজার শুকনা খাবারের প্যাকেট মজুতের পাশাপাশি ৪০০ শতাধিক তাঁবু, স্থায়ী ১০টিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, মেডিকেল টিম এবং বেশ কিছু নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় শহর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর উপজেলার বাগুড়িয়া থেকে কামারজানি পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশ কিছু জায়গা। এরই মধ্যে পানির চাপে সাঘাটা উপজেলার দক্ষিণ উল্যা গ্রামে শ্মশানঘাট সড়কের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে গেছে। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এছাড়া পানি বৃদ্ধির সঙ্গে চার উপজেলার নদী তীরবর্তী অন্তত ২০টি পয়েন্টে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে বিলীন হয়েছে কয়েকশ বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা।