আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে এসি বসিয়েছেন ‘অস্বচ্ছল ব্যক্তি’
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২২, ০১:০৭ PM , আপডেট: ২৪ জুন ২০২২, ০১:০৭ PM

আর্থিক স্বচ্ছল নেই। তাই সরকার থেকে পেয়েছিলেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। সে ঘরকে করেছেন সম্প্রসারণ। বসিয়েছেন এয়ার কন্ডিশন (এসি)। আছে ফ্রিজসহ বিলাসবহুল সব আসবাবপত্র। ছবির মতো মনে হলেও বাস্তবে ঘটেছে এমন।
ইকবাল সেপাই নামের এ ‘অস্বচ্ছল ব্যক্তি’র বাড়ি পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নে। অবশ্য তার রয়েছে একটি রাজনৈতিক পরিচয়ও তিনি জাতীয় পার্টির (জেপি-মঞ্জু) অঙ্গ সংগঠন ছাত্রসমাজ-র বালিপাড়া ইউনিয়ন কমিটির আহবায়ক। তার বাবা আলম সেপাইও রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। পেশায় রাজমিস্ত্রি আলম সেপাই স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা। যিনি নিজেও একটি ঘর পেয়েছেন সরকার থেকে।
ইকবাল সেপাই ঘরটি পেয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোঠায়। এখন প্রশ্ন উঠছে আশ্রয় প্রকল্পের ঘরের বরাদ্দ নিয়ে। কীভাবে এমন স্বচ্ছল একজন ব্যক্তি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর ভাগিয়ে নিয়েছেন তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের। যদিও ইবালের দাবি ঘর পাওয়ার সময় তার আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না। ঘরে এখন সুদিন ফিরেছে। আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে মেয়ের কষ্ট হয় দেখে এসি বসিয়েছেন।
ইকবাল সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঘরটির সামনের বারান্দা ভেঙে তা নতুন করে সম্প্রসারণেরও কাজ করছেন। তার ঘরের চালার ওপর স্থাপন করা হয়েছে সৌর প্যানেল ও স্যাটেলাইট চ্যানেল নেটওয়ার্ক আকাশ। ইকবালের বাবাও সরকারিভাবে পাওয়া ঘরটি সম্প্রসারণ করে প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের করেছেন।
ইকবালের দাবি, এক আত্মীয়ের দান করা জমিতে তিনি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পাওয়া ঘরটি তুলেছেন। যখন তাকে ঘরটি দেওয়া হয়েছিল তখন তার আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তবে বর্তমানে বালুর ব্যবসা করে তার সচ্ছলতা ফিরেছে।
তিনি জানান, তার ঘরটি মাঠের মধ্যে ফাঁকা স্থানে হওয়ায় দিনের বেলা প্রচণ্ড গরমে সেখানে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। প্রতিদিনই তার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে নিয়ে অন্যের বাড়িতে থাকতে হতো। কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে ঋণ করে এসি বসিয়েছেন। ঘরে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় তিনি সামনের বারান্দা সম্প্রসারণ করছেন।
ইকবালের প্রতিবেশীরা জানান, ইকবাল তার শিশু কন্যাকে গরম থেকে রক্ষায় ঘরে এসি বসিয়েছেন। আগে তার অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকলেও, এখন সচ্ছলতা এসেছে।
ইকবালের বাবা আলম বলেন, আমার ছেলে খুবই পরিশ্রম করে আর্থিক সচ্ছলতা পেয়েছে। বিলাসিতার জন্য সে ঘরে এসি বসায়নি। শুধুমাত্র শিশু কন্যাটিকে গরম থেকে বাঁচাতে ঘরে এসি বসিয়েছে।
ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুৎফুন্নেসা খানম বলেন, ২০২০ সালের শেষের দিকে ইকবালকে স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোঠায় ঘরটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। ঘর পাওয়ার জন্য যে অর্থনৈতিক অবস্থা থাকা দরকার ইকবাল তখন ওই অবস্থায়ই ছিলেন। বর্তমানে তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল। তবে তিনি ইকবালকে ঘর দেয়ায় অনিয়ম হলে তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান।