বিএসএফের ভয়ে সন্তানদের নিয়ে নদীতে লাফ, নিখোঁজ ২ শিশু
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৭ PM , আপডেট: ০২ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৭ PM

বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে নদী পারাপারের সময় এক দম্পতির নিখোঁজ দুই সন্তানের সন্ধান মেলেনি এখনও। দু’দেশের নোম্যান্স ল্যান্ডের নীলকুমর নদীর তীরবর্তী এলাকায় শিশুদের সন্ধানে পাগলের মতো ঘুরছেন তাদের স্বজনরা। নিখোঁজ ওই দুই শিশুর নাম পারভীন খাতুন ও শাকিবুল হাছান।
শুক্রবার মধ্যরাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার র্ধমপুর সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
নিখোঁজ শিশুদের দাদা জিয়া উদ্দিন জানান, প্রায় ১৬ বছরে আগে রহিম উদ্দিন অন্যদের সঙ্গে ইটভাটায় কাজ করার জন্য দিল্লিতে যান। সেখানে কাজ করার পর ২০০৫ সালে ভারতের দিনহাটার নয়ারহাট এলাকার সাজেদুল হকের মেয়ের সঙ্গে রহিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। তারা সেখানেই থাকেন। তাদের দুই ছেলেমেয়ের জন্ম ভারতে। রহিম উদ্দিন মাঝে মধ্যে দেশে আসতেন। টাকাও পাঠাতেন বৃদ্ধ মা রহিমার কাছে। নিখোঁজ ওই দুই শিশু ভারতের ভূ-খণ্ডে জন্ম নিলেও দাদার বাড়িতে কখনও আসেনি। এ কারণে প্রথমবারের মতো রহিম উদ্দিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ঈদুল আজহা উদযাপনের জন্য আসার চেষ্টা করছিলেন।
সন্তানদের ফেরত চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন রহিম উদ্দিন। তিনি জানান, নিরাপদে দেশে ফেরার জন্য ভারতের দালালদের সঙ্গে ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করেন তিনি। শুক্রবার রাতে দালালরা তাদের সীমান্তে এক বাড়িতে এনে রাখেন। সেখানে আরও ২০-২৫ জন নারী পুরুষ ও শিশু ছিল।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে দালালার ৯৪৩ নম্বর মেইন পিলারের পাশে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের র্ধমপুর সীমান্ত দিয়ে তাদের পার করার চেষ্টা করেন। সবাইকে কাঁটাতার পার করে নদী পথে নিয়ে আসা হয়। এ সময় হঠাৎ করে ভারতের শেউটি-১ ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা লাইট জ্বালিয়ে দেখার পর তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দালালরা তড়িঘড়ি করে তাদের নদী পার হওয়ার জন্য বলে। তিনি জিনিসপত্রসহ তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে নদীতে নামেন। কিন্তু তারা কেউই সাঁতার জানতেন না। এই সময় নদীর স্রোতের টানে রাতের অন্ধকারে তার স্ত্রীর হাত থেকে ছুটে সন্তানরা নিখোঁজ হয়। পরে পানিতে ডুবে সন্তানদের অনেক খোঁজ করেন । কিন্তু তাদের সন্ধান পাননি।
এ প্রসঙ্গে লালমনিহাটের অধীনে কাশিপুর কোম্পানি কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছে বলে শুনেছি। সেখানে টহল পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিএসএফকে জানানো হয়েছে।