কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও শিক্ষক হত্যার দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন
- কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২২, ০৫:৪৮ PM , আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২২, ০৬:০২ PM

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানায় ছুরিকাঘাতে কাপড় ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল (৫০) এবং স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহন (৫৫)-কে হত্যার দায়ে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক মো: তাজুল ইসলাম জনাকীর্ন আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত: ইদ্রিস আলীর ছেলে মো: তারিক প্রামানিক (৪২), মোশারফ হোসেনের ছেলে কামাল রেজা নিপু (৫২), আব্দুর রশিদের ছেলে সিরাজুল ইসলাম মাসুদ (৪২) এবং নবীর আলীর ছেলে রায়হান আলী (৪৭)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৫ আগস্ট রাত সোয়া ৯টায় ভেড়ামারা রেল বাজার মসজিদ সংলগ্ন মার্কেটে উপজেলার আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক ও কাপড় ব্যবসায়ী মো: মেহেরুল ইসলাম তার নিজ দোকানের আঙ্গিনায় স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহ মোহনসহ আরও ৬/৭ জন বসে গল্প করছিলো। এসময় হঠাৎ তিনটি মটরসাইকেলযোগে ৮/৯ জনের অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদল সেখানে এসে উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ শুরু করে এবং ১০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গোটা শহরজুরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরে এবং লোকজন ছুটাছুটি করতে থাকে।
সংবাদ পেয়ে ভেড়ামারা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত জখম হওয়াদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রাথমিক চিকিৎসা চলাকালে স্কুল শিক্ষক বান্দা ফাত্তাহকে মৃত: ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ৬ জনের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা মেহেরুল (৫০) এর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত উন্নত চিকিসার জন্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
পরবর্তীতে নৃসংশ এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত বা আহত কারো পরিবার বা আত্মীয় স্বজন থানায় মামলা করতে অনিচ্ছা পোষণ করায় ওই বছরের ১৭ আগস্ট ভেড়ামারা থানার পুলিশ উপ পরিদর্শক শেখ আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র আইনে মামলা করেন।
মামলাটি ভেড়ামারা থানার পুলিশ পরিদর্শক আজম খান তদন্ত শেষে ২০১১ সালে ২১ জুলাই ১৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যার দায়ে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
কুষ্টিয়া আদালতের সরকারী কৌসুলি এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, ভেড়ামার থানার চাঞ্চল্যকর গুলিবর্ষণসহ হত্যার অভিযোগ এনে আদালতে দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানি শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ৫ জনের বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
অপর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে অভিযুক্ত সদর উপজেলার কানপুর গ্রামের মৃত: চাদ আলীর ছেলে সিদ্দিকুল ওফরে বাংলা ভাই ইতোপূর্বে আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হন।
মামলা পরিচালনাকারী আসামীপক্ষের আইনজীবি এ্যাড. সুধীর কুমার শর্মা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করবেন বলে জানান।