মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনা

অনন্ত যাত্রার শেষ আনুষ্ঠানিকতায়ও তারা একে অপরের সঙ্গী 

অনন্ত যাত্রার শেষ আনুষ্ঠানিকতায়ও তারা একে অপরের সঙ্গী 
অনন্ত যাত্রার শেষ আনুষ্ঠানিকতায়ও তারা একে অপরের সঙ্গী   © সংগৃহীত

অবকাশ যাপনে বের হয়েছিলেন তারা একসঙ্গে। কিন্তু সে যাত্রা তাদের শেষ হয়েছে বিষাদে। অনন্ত পথের যাত্রী হয়েছেন সঙ্গে থাকা ১৭ জনের ১১ জন। বাকীরাও সঙ্গী হারিয়ে মুহ্যমান। স্বজন হারানোর কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে হাটহাজারীর বাতাস। আর শেষ যাত্রার আনুষ্ঠানিকতায়ও ৫ জন ছিলেন একে অপরের সঙ্গী। 

শনিবার সকাল সোয়া ১০টায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত পাঁচ জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। হাটহাজারীর খন্দকিয়া ছমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একসঙ্গে তাদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় হাটহাজারীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষজন অংশ নেন।

দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের মধ্যে আজ সকালে মোস্তফা নিরু, সামিরুল ইসলাম হাছান, রিদোয়ান ও সজীবের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজায় অংশ নিতে আসা সবাই ছিল শোকে বিহ্বল। আত্মীয়স্বজন-প্রতিবেশীদের চোখে নেমে এসেছে শোকের কালো ছায়া।

খন্দকিয়া গ্রামের ৬০ বছরের বাসিন্দা আবুল হাসান বলেন, একসঙ্গে এতো মৃত্যু আমাদের এলাকায় আর কখনো হয়নি। একসঙ্গে পাঁচ জনের জানাজাও আমি কখনো পড়েনি। ছেলেগুলো খুব মেধাবী ছিল।

বোয়ালখালী থেকে আত্মীয়ের জানাজায় অংশ নিতে এসেছেন জাহেদ। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় একই এলাকার ১১ জন মারা গেছে। আমরা সবাই শোকাহাত। আল্লাহ যেন তাদের জান্নাতবাসী করেন।

জানাজায় অংশ নিতে আসা মোহাম্মদ ইমন বলেন, আমাদের জন্য দিনটি শোকের। দুর্ঘটনায় কারো অবহেলা ছিল কিনা, তা তদন্ত করে বের করা উচিত। আমরা দোষীদের শাস্তি দাবি করছি। ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ আবুল হাশেম বলেন, জীবনে প্রথমবারের মতো পাঁচ জনের জানাজা একসঙ্গে পড়লাম। মারা যাওয়া সবাই খুব মেধাবী ছিল। এলাকার মেধাবী সন্তানদের হারিয়ে আসলে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছি।

জানাজায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা অংশ নেন। এর আগে শুক্রবার রাতে দুই জনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়ে। এছাড়া নিহতদের মধ্যে শান্ত শীল নামে একজনে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।