ফটিকছড়িতে ১৮ তম চা বাগান হিসেবে স্বীকৃতি পেল 'চৌধুরী চা বাগান'
- ফটিকছড়ি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৭:৪৮ PM , আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৭:৫২ PM

সিলেট জেলার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী চা বাগান চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে অবস্থিত। এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত ১৭টি চা বাগান শিল্পের দিক দিয়ে ফটিকছড়িকে সমৃদ্ধ করেছে। আর চট্টগ্রামের বৃহত্তম চা বাগান গুলি একমাত্র ফটিকছড়িতে অবস্থিত।
আজ ৮ ই আগস্ট চা বোর্ডের ফটিকছড়ির ১৮ তম চা বাগান হিসেবে স্বীকৃতি পেল চৌধুরী চা বাগান। যেটির অবস্থান ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন পশ্চিম ভূজপুরে। চৌধুরী চা বাগানের স্বত্তাধিকারীরা হলেন।সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী, মহিউদ্দিন চৌধুরী, ইফতিখার উদ্দিন চৌধুরী এবং মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।
দেশে চাহিদার বিরাট একটি অংশ ফটিকছড়িতে উৎপাদিত চায়ের মাধ্যমে পুরণ করা হয়। ইতিহাস ঐতিহ্যের দিকে তাকালে দেখা যাবে ফটিকছড়ির ১৭টি চা বাগানের প্রতিষ্টা নামকরন অবস্থান সমস্যা সম্ভাবনার এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যা তুলে ধরা নিঃসন্দেহে দুরুহ ব্যাপার। তবে একথা সত্য যে ফটিকছড়ির হাজার হাজার একর উর্ব্বর ভুমি চা বাগানগুলোর দখলে। সরকার এসব চা বাগান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বেসরকারী খাতে ছেড়ে দিয়ে লিজ দিয়ে থাকে। ব্যক্তি মালিকানায় এসব বাগান লিজ দিয়ে সরকার প্রত্যেক বছর বিশাল অংকের রাজস্ব আয় করলে ও বাগানের রক্ষনাবেক্ষন তথা চা শিল্পের প্রসারে সুদুর প্রবাসি পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছেনা। ফলে চা বাগানগুলো নানা সমস্যায় জর্জরিত। এসব সমস্যার বেড়াজালে পড়ে চা শিল্পের উল্লেখযোগ্য কোন প্রসার ঘটছেনা। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামিতে বিদেশে চা রপ্তাণী করা তো দুরের কথা দেশে চায়ের চাহিদা পুরণ করা ও কঠিন হয়ে পড়বে বলে সংশ্লিষ্ঠ সূত্রগুলো মনে করছে।
বর্তমানে দেশের ১৬২টি চা বাগানের মধ্যে ২১টি রয়েছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের ২১টি চা বাগানের মধ্যে শুধুমাত্র ফটিকছড়ি উপজেলাতেই রয়েছে ১৭টি চা বাগান। এছাড়া বাশঁখালিতে ১টি, রাঙ্গুনিয়ায় ২টি ও রাঙ্গামাটিতে ১টি রয়েছে। দেশের মোট চায়ের ১০ শতাংশ উৎপাদন হয় ফটিকছড়ির চা বাগান থেকে।
প্রকৃতিক অপররূপ সৌন্দর্য্যে ভরপুর ৩০৮ বর্গমাইলের ফটিকছড়ি উপজেলায় সাড়ে ১৫ হাজার একর পাহাড়ি এলাকা জুড়ে গড়ে উঠে এসব চা বাগান। দেশের শীর্ষ স্থানীয় ১০টি চা বাগানের মধ্যে ৫টির অবস্থান এখানে।
চা সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চল সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের চা বাগান গুলোতে বছরে ৮২ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। এদের মধ্যে ফটিকছড়ির ১৭ চা বাগান থেকে বছরে উৎপাদিত হয় প্রায় ৭৭ লাখ কেজি চা। ২০১৯-২০ সালের চা নিলামে দেশের ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে শীর্ষে আছে ফটিকছড়ি উপজেলার ভূজপুর থানাধীন কৈয়াছড়া ডলু চা বাগান।
নিলামে এ বাগানে সর্বমোট পাঁচ লাখ ৮২ হাজার কেজি চা বিক্রি হয়েছে। যার গড় বিক্রয়মূল্য ২৯৭ টাকা ৯৭ পয়সা। এক হাজার ৭০০ একর বাগানটির চলতি বছরের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে সাত লাখ কেজি। অন্যদিকে ব্র্যাকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কর্ণফুলী চা বাগানের নিলামে অবস্থান চতুর্থ। নিলামে বাগানটির প্রায় ১৪ লাখ কেজি চা বিক্রি হয়েছে। যার গড় বিক্রয়মূল্য ২৬৭ টাকা। ছয় হাজার ৫৭২ একরের বৃহৎ এই বাগানের চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ২০ লাখ কেজি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশের ১৬২টি চা বাগানে বিশ্বের ৩ শতাংশ চা উৎপন্ন হয়। এই খাত ৪০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে।