খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প নির্মাণ স্থগিত

সারাদেশ
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বলদিপাড়া-হলদিঘর শতবর্ষী খেলার মাঠ  © সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বলদিপাড়া-হলদিঘর শতবর্ষী খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে স্থানীয় প্রশাসন। মাঠ রক্ষায় স্থানীয় গ্রামবাসীর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। সেই সঙ্গে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য খোঁজা হচ্ছে নতুন জায়গা। শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সকালে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত বাতিল করে স্থানীয় প্রশাসন।

শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘উপজেলার হলদিঘর-বলদিপাড়ায় খেলার মাঠের পরিবর্তে পাশের গালা ইউনিয়নের কাশিপুর মৌজায় আশ্রয়ণ প্রকল্পটি করার জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ৫২ শতকের একটি সরকারি খাসখতিয়ান ভুক্ত জায়গা রয়েছে। সেখানে প্রকল্পের ঘর নির্মাণে কোনো সমস্যা নেই। এজন্য জমি জরিপের পর প্রাথমিক একটি স্কেসসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেলে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।’

মামলা আইনের গতিতে চলবে জানিয়ে আবুল কালাম বলেন, ‘যারা আইন হাতে তুলে নিয়েছে, তাদের বিচার আদালত করবেন।’ এদিকে প্রশাসনের সিদ্বান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলদিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও বিকেএসপির নিয়মিত ক্রিকেটার নয়ন তারা বলেন, ‘আজকে গ্রামে কোনো পুলিশ আসেনি। নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। গ্রামে পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে আমরা অনেকটা স্বস্তি বোধ করছি। তবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দুই গ্রামের অধিকাংশ নারী পুরুষ এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে।‘

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণকে কষ্ট দিয়ে কিছু করতে চাই না। তাই গ্রামবাসীর দাবির বিষয়টি আমলে নিয়ে কায়েমপুর ইউনিয়নের বলদিপাড়া-হলদিঘর খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সিদ্বান্ত স্থগিত করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি আইনের গতিতে চলবে। এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।’

উল্লেখ্য, বলদিপাড়া-হলদিঘর এলাকায় খেলার মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গ্রামবাসী আন্দোলন করে আসছিলেন। রোববার (২১ আগস্ট) সকালে ওই মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের স্থান পরিদর্শন ও মাটি ভরাট করতে বালুর ট্রাক নিয়ে যান ইউএনও ও এসিল্যান্ড। এসময় বলদিপাড়া গ্রামের নারী-পুরুষরা বাঁশ দিয়ে তাদের পথরোধ করেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এসময় ইট-পাটকেল ছুড়ে ইউএনওর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ইটেরর আঘাতে এসিল্যান্ড লিয়াকত সালমান আহত হন। সে সময় পুলিশের লাঠিচার্জে শিশুসহ স্থানীয় ৯ বাসিন্দা আহত হন।

এ ঘটনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের পেশকার আব্দুল হাই বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং নাম না জানা ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।


মন্তব্য