চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস: ব্যাংকে চাকরি পেলেন ঢাবির সন্তোষ

ঢাবি
ঢাবি শিক্ষার্থী এবং তার মা  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও মৌলভীবাজারের শমশেরনগর কানিহাটি চা-বাগানের সেই সন্তোষ রবিদাস অঞ্জন এখন নবীন ব্যাংকার। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকে জুনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।

আগামীকাল রোববার থেকেই তাঁর কর্মজীবন শুরু হবে। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের একটি সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই সন্তোষের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। রোববার থেকেই সন্তোষের এক মাসের বনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু হবে।

এদিকে, এর আগে চা–শ্রমিকদের আন্দোলনের মধ্যে তার চা-শ্রমিক মাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন সন্তোষ। পরে ওই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়। এর সূত্র ধরে যোগাযোগ করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। 

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছিলেন, জন্মের ছয় মাসের মাথায় তিনি বাবাকে হারান। মা চা-বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। ২০০৭ সালে তিনি যখন ক্লাস ফাইভে পড়েন তখন তার মায়ের মজুরি ছিল ৮৮ টাকা। পঞ্চম শ্রেণির পর ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুলে পাঁচ বছরের জন্য বিনা মূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পান। তখন তার মা সামান্য আয়ের একটা অংশ থেকে তাকে টিফিন খাওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দিতেন।

২০১৩ সালে বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি হন। তখন তার মা ১০২ টাকা করে মজুরি পেতেন। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দেন মা।

এইচএসসির পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ের টাকা জোগাতে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আবার তার মাকে ঋণ নিতে হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সন্তোষ। এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সহায়তা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সন্তোষ।