বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণ: সব বিল পরিশোধ করলেন দুদকের এই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:০৯ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:০৯ PM

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সত্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এমদাদুল হক (৬৫) নামে এক অবসরপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা। এ পর্যন্ত যতদিন বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণ করেছেন তার একটি হিসাব করে বকেয়া পরিশোধ করেছেন তিনি।
সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে এমদাদুল হক নিজেই মোট দুই হাজার ৫৩০ টাকা বকেয়া পরিশোধ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার কনিকাড়া গ্রামের শামসুল হকের ছেলে এমদাদুল হক। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২১ সালে ডিসেম্বরে তিনি চাকরিজীবন থেকে অবসরে যান। ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের জনক এমদাদুল হক পরিবার নিয়ে জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে বসবাস করেছেন।
এমদাদুল হকের বড় ছেলে ইমরান বলেন, আমার বাবা সৎভাবে জীবন যাপন করেন। মানুষ মনে কষ্ট পায় এমন কাজ তিনি কখনো করেননি। কারও কাছে এক টাকা ঋণী থাকলেও খুঁজে বের করে তিনি পরিশোধ করেন।
ইমরান বলেন, চাকরিজীবনের শেষ দিকে বাবা দুদকের হেডকোয়ার্টারে ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রেনে তিনি ঢাকা যাতায়াত করেছেন। তখন বিভিন্ন কারণে অনেক সময় বাবা ট্রেনে টিকিট না কেটে আসা-যাওয়া করেছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি চাকরিজীবন থেকে অবসরে যান। কিন্তু জীবনে কতবার তিনি ট্রেনে টিকেট না কেটে ভ্রমণ করেছেন তার হিসাব তিনি গুনে রেখেছেন। সেই হিসাব অনুযায়ী তিনি সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে ট্রেনের বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের প্রধান বুকিং সহকারী কবির হোসেন তালুকদার বলেন, সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্টেশন কাউন্টারে এক ব্যক্তি আসেন। তিনি জানান যে আগে বিভিন্ন সময়ে টিকিট না কেটে তিনি ভ্রমণ করেছিলেন এবং উনার কাছে হিসাব আছে যে কতবার টিকিট না কেটে ভ্রমণ করেছেন। সে হিসাবে অনুযায়ী দুই হাজার ৫৩০ টাকা টিকিট বা ভাড়া বাবদ রেলকে দিতে চাচ্ছেন। তখন স্টেশন বুকিং কাউন্টার থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-চট্টগ্রাম পর্যন্ত মহানগর প্রভাতীর ওই টাকা সমমূল্যের আসনবিহীন টিকিট ইস্যু করে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, এমদাদুল হক নতুন প্রজন্মকে শিক্ষা দিয়ে গেলেন যে রেলে বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা অন্যায়। উনি সবার জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। তার ট্রেন ভ্রমণে আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করবো।
এ বিষয়ে এমদাদুল হক বলেন, আমি যত পূণ্যই করি না কেন, এই দেনার দায়তো কোনো পূণ্য দিয়ে শোধ করার উপায় নেই। তাই সরাসরি রেলের খাতেই জমা দিয়ে দিলাম। জানি না তাতে আমার দায় মুক্তি হবে কি না। তবে অন্তত মানসিক প্রশান্তি পাবো।
সূত্র: ইউএনবি