বিরিয়ানি কিনতে পাঠিয়ে ভ্যান নিয়ে পালালো যাত্রীবেশী চোর
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:২০ PM , আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:২০ PM

দুজন লোক আমার ভ্যান ভাড়া নেয়। তারা টুঙ্গিপাড়া থেকে সদর হাসপাতাল থেকে সিলিন্ডার নিয়ে আবার টুঙ্গিপাড়ায় আসার কথা বলেন। সদর হাসপাতালে পৌঁছালে শুরু করেন নানান বাহানা। এক পর্যায়ে আমাকে ১২০ টাকা দিয়ে বিরিয়ানি আনতে পাঠায়। ফিরে এসে দেখি, আমার ভ্যান নেই। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন সালমান । সালমান গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে।
১২ বছরের কিশোর সালমান। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ঘরে অসুস্থ মা-বাবা। তাদের প্রতিদিন ৫০০ টাকার ওষুধ লাগে। চিকিৎসা আর সংসারের খরচ সামলাতে ভাড়ায় ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালায় সে। শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভ্যান নিয়ে বের হলে দুজন লোক ভাড়া নেয়। পরে সালমানকে বিরিয়ানি আনতে পাঠিয়ে তারা ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর থেকেই গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালের সামনে বসে বুকফাটা আর্তনাদ করছে সালমান।
সে আরও বলে, আমার কোনো বড় ভাই নেই। বাবা-মা দুজন অসুস্থ। ভ্যান চালিয়ে আমি আমার বাবা-মার চিকিৎসার খরচ যোগাই। প্রতিদিনের বাজারের খরচ টানতে হয়। আমি এখন কীভাবে আয় করব? আমার বাবা-মাকে কে দেখবে?
ছেলের ভ্যান হারিয়ে যাওয়ার কথা শুনে ছুটে এসেছেন অসুস্থ মা। এ সময় সালমানের মা বুকফাটা আহাজারি করতে করতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল হলে আমাগো কিস্তি আছে। আমরা এহন কী করবানি? আমাগের সংসার চলত এই ভ্যান দিয়ে। আমরা এহন কী খাইয়ে বাঁচবানি। আমাগের তো কেউ নাই। আমাগে কে দেখবে এহন। আরেকটা ভ্যান কেনার টাকা কই পাব?
স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী এম আরমান খান জয় বলেন, আমরা খবর পেয়ে এসে দেখি, ছেলেটি ভ্যান হারিয়ে আহাজারি করছে। দেখে খুবই খারাপ লাগছে। এতটুকু একটা বাচ্চা, পেটের দায়ে ভ্যান নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। আমাদের পক্ষ থেকে ছেলেটিকে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করব।
ভ্যানটির খোঁজ অথবা সালমানকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৮৮-৬৭৬৭৭৫ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।