ভিক্ষা বেশি পেতে মেয়ের পা পুড়িয়ে ক্ষত করে দিতেন মা
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০৮ PM , আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২, ১০:১৬ PM

চট্টগ্রামে বেশি ভিক্ষার আশায় মেয়ের পায়ে পলিথিন বেঁধে তাতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ক্ষত করে দিত এক মা। একই সঙ্গে তাকে প্রতিবন্ধীর অভিনয়ও শিখিয়েছিলেন তিনি।
শনিবার (২২ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্ত ও মেয়েটির আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
আরও পড়ুনঃ খাটের নিচে তেলের খনি
আদালত সূত্র থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড় বদনাশাহ মাজার গেটে সে মায়ের সঙ্গে ভিক্ষা করতেন। বেশি ভিক্ষা পেতেই মা হোসনে আরা বেগম মেয়েটির পায়ে পলিথিন পেঁচিয়ে পুড়িয়ে ক্ষত করে দিতেন।
এর আগে ছোট ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য হোসনে আরা বেগম মেয়েটিকে একটি বাসায় কাজে দিয়েছিল। পরে আবার তাকে ভিক্ষা করার জন্য নিয়ে আসেন। তবে ভুক্তভোগী মেয়েটি মায়ের কাছে ফিরতে চায়নি।
এ কারণে রেগে মা হোসনে আরা বেগম চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ শিশুটিকে অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই সময় বলা হয়, বদনাশাহ মাজারের সামনে থেকে তার মেয়েকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আসামি করা হয় মেয়েটি যে বাসায় কাজ করতেন, ওই বাসার রাশেদুল আলম ও তার স্ত্রী ফারজানা আলী চৌধুরীকে। পরে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
পিবিআই জানান, হোসনে আরা বেগম ও শিশুটির নয় বছরের আরেক ভাইও ভিক্ষা করে। ভুক্তভোগী মেয়েটির বয়স যখন তিন বছর, তখন তার বাবা মারা গেছে। তারা দুই ভাই ও এক বোন। মেয়েটি ভাই-বোনদের মধ্যে দ্বিতীয়। তাদের স্থায়ী কোনো ঠিকানা নেই। ফুটপাতে ভিক্ষুক মায়ের সঙ্গে বেড়ে ওঠা শিশুটির। বড় ভাই তাদের ছেড়ে চলে গেছে।
আরও পড়ুনঃ কবিতা আবৃত্তি করবেন হিরো আলম
এ বিষয়ে পিবিআই এস আই জাহেদুজ্জামান বলেন, ভুক্তভোগী শিশুটিকে অপহরণের অভিযোগ করা হলেও ঘটনাস্থলের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় দেখা যায়, শিশুটিকে অভিযুক্ত দম্পতির কাছে তুলে দেন তিনি নিজে (হোসনে আরা)। এ কারণে ওই দম্পতিকে জড়িত নন উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে আদালতে। এ ছাড়া কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে পারেননি ওই নারী।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ চট্টগ্রামের বিচারক ফেরদৌস আরার আদালতে ১০ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন গত মাসে জমা দেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহেদুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে চট্টগ্রামের ফরহাদাবাদে মহিলা ও শিশু কিশোরী আবাসনকেন্দ্রে (সেফ হোম) রাখা হয়েছে শিশুটিকে।