নিহত সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান!

পুলিশ
মৃত হাসিবুর রহমান   © ফাইল ফটো

কুষ্টিয়ার সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল হত্যাকাণ্ডের তিন মাস পার হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। কোনো রহস্যও উন্মোচন করতে পারেনি। উল্টো গত শনিবার রাতে নিহত রুবেলকে গ্রেপ্তার করতে শহরের মিলপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ রুবেলের হাউজিং এলাকার বাড়িতে অভিযান চালায়।

ফাঁড়ির এসআই আসাদ একটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে রুবেলের বাড়িতে যান বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের এমন আগমনে বিস্মিত তার পরিবারের সদস্য ও গণমাধ্যমকর্মীরা।

কুষ্টিয়ার সংবাদকর্মীরা জানান, রুবেল দুর্বৃত্তের হাতে নিহত হয়েছেন গত জুলাই মাসে। হোতাদের চিহ্নিত এবং তাদের গ্রেপ্তারে এখন পর্যন্ত নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা। কিন্তু তার পরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কোনো অগ্রগতি নেই। তবে বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, রুবেল হত্যাকারীদের চিহ্নিত ও তাদের গ্রেপ্তার করতে না পারলেও সেই রুবেলকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ তার বাড়িতে ঠিকই হাজির হয়েছে।

রুবেল হত্যা মামলার বাদী তার চাচা মিজানুর রহমান বলেন, রুবেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ওয়ারেন্ট তো দূরের কথা। শনিবার কুষ্টিয়া শহরের মিলপাড়া ফাঁড়ির এএসআই আসাদ রুবেলের বাড়িতে গিয়েছিলেন একটি চেক ডিস-অনারের মামলার ওয়ারেন্ট নিয়ে। রুবেল বেঁচে নেই জানালে তখন এএসআই আসাদ তার মৃত্যু সনদ চান। মৃত্যু সনদ দেখালে তখন ফিরে আসেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।  

এএসআই আসাদুল ইসলাম আসাদ বলেন, সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের নামে চেক সংক্রান্ত একটি মামলায় (এনআইডি এক্টের ১৩৮ ধারায়) ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। আদালতের সিআর ৩১০/২২ নম্বরের ওয়ারেন্ট তার নামে ইস্যু হয়। এটি হাতে পাওয়ার পর রুবেলের বাসায় গিয়ে জানতে পারি তিনি মারা গেছেন। এরপর তার মৃত্যু সনদ নিয়ে আদালতে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খান বলেন, একটি মামলায় রুবেলের নামে গ্রেপ্তাতারি পরোয়ানা হয়েছে। এজন্য তার বাড়িতে পুলিশ গিয়েছিল। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জেনে একটু পরে আপনাকে জানাচ্ছি।

গত ৩ জুলাই আমাদের নতুন সময় পত্রিকার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি হাসিবুর রহমান রুবেল শহরের নিজ অফিস থেকে বাইরে এলে নিখোঁজ হন। এরপর ৭ জুলাই কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার গড়াই নদী থেকে তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।