হু হু করে কমছে পেঁয়াজের দাম

পেঁয়াজ
  © সংগৃৃহীত

পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়ায় দীর্ঘ দুই মাস ২০ দিন বন্ধের পর হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। এতে করে দেশিয় পেঁয়াজের দাম হু হু করে কমতে শুরু করেছে। আর হিলিতে এক রাতের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা করে কমেছে দাম। পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ। আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে, দাবি পেঁয়াজ আমদানিকারকদের।

গতকাল সোমবার (৫ জুন) হিলি বন্দর দিয়ে ৩টি ট্রাক পেঁয়াজ দেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে আরও ১টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক দেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দিনের মত হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার হিলি বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল যে পেঁয়াজ ৭৫টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও আজ তা কমে ৬৫ থেকে ৭০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ বন্দরে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। যা বাজারে খুচরাতে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুন:- ভারত থেকে আমদানিকৃত ৭৫মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেনাপোলে পৌঁছেছে

এক ক্রেতা বলেন, দুদিন আগে পেঁয়াজ কিনলাম ৯০ টাকা কেজি দরে আজ কিনলাম ৭০ টাকা কেজি দরে। এই পেঁয়াজের দামটা যদি ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে আসে তাহলে আমাদের মত মানুষদের জন্য খুব ভালো হয়। সামনে কুরবানীর ঈদ এ সময়ে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা থাকে যার কারণে দামটা কমলে আমাদের জন্য সুবিধা হয়।

অপর একজন ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়তে বাড়তে ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল এতে করে আমাদের মত সাধারণ ক্রেতাদের কিনতে সমস্যা হচ্ছিল। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়ায় দেশিয় পেঁয়াজ আমরা ৭০ টাকায় কিনতে পারছি। আশা করছি আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে দাম আরও কমবে।

হিলি বাজারের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করছে এই আতঙ্কেই আড়তদাররা পেঁয়াজের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। মোকামে যে দেশিয় পেঁয়াজ ৩২শ' টাকা মণ বিক্রি হয়েছিল সেই পেঁয়াজ ২৪শ' থেকে ২৫শ' টাকায় নেমে এসেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় দেশিয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে দাম কমে যাবে এর কারণে লোকশান গুণতে হবে যার কারণে আড়তদাররা পেঁয়াজ কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছে। 

আরও পড়ুন:- আমদানির খবরে পেঁয়াজের দামে ধস

হিলি স্থলবন্দর আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, সরকারি সিন্ধান্ত মোতাবেক গতকাল আমরা পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র আইপি পেয়েছি। সেই মোতাবেক পেঁয়াজ আমদানির জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়েছে। গতকাল সোমবার বন্দর দিয়ে ৩ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে যার কারণে দেশিয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে গেছে। 

আজ পর্যাপ্ত পরিমানে পেঁয়াজের ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। এতে করে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দামের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামের যে ঊর্ধ্বমুখি অবস্থা দাঁড়িয়েছিল সেই দাম অর্ধেক কমে যাবে। এছাড়া কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে আমদানিকারকরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। পর্যাপ্ত পরিমানে পেঁয়াজের এলসি খোলাসহ পেঁয়াজ আমদানির পরিমান বাড়িয়ে দেয়া হবে যাতে করে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দামে প্রভাব না পড়ে দাম বৃদ্ধি যেন না হয়। বাজার যেন সবসময় পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যেই থাকে সেটিই আমরা আশা করছি।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি না থাকায় গত ১৬ই মার্চ থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ায় গতকাল সোমবার থেকে আবারও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। গতকাল প্রথমদিনেই ৩টি ট্রাকে ৬৩ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ যেহেতু কাঁচামাল দ্রুত পচনশীল পণ্য তাই কাস্টমসের প্রক্রিয়া শেষে যেন দ্রুত আমদানিকারকরা পেঁয়াজ খালাস করে নিতে পারেন এজন্য বন্দর কতৃপক্ষ সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে রেখেছে।


মন্তব্য


সর্বশেষ সংবাদ