চাল ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে ২ মন্ত্রীর ২ মন্তব্য
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৭:৩৩ PM , আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৭:৩৩ PM

দেশে চালের বাজার ও নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে দুই মন্ত্রী দুই ধরনের মন্তব্য করেছেন। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে বিশ্বব্যাপী খাদ্যশস্যের দাম বাড়লেও সরকার দেশে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, জিনিসপত্রের দাম উর্ধ্বমুখী। এ কারণে মানুষ কিছুটা চাপে আছে। সরকার নানামুখী উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষের কষ্ট দূর করার চেষ্টা করছে।
রোববার রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন আবদুল্লাহপুর পলওয়েল কনভেনশন শপিং সেন্টারের পেছনে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জুলাই মাসের ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তারা।
এ দিন টিসিবি সারা দেশের ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে নিয়মিত পণ্যের সঙ্গে প্রথমবারের মতো ৩০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল বিক্রি শুরু করেছে। মাসব্যাপী চলবে এ বিক্রি কার্যক্রম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে, বোরো ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। দেশে এখন চালের মজুত ভালো। এ কারণে চালের বাজারে বড় কোনো সংকট নেই, দামও স্থিতিশীল রয়েছে। তাছাড়া সরকার চালের বাজার ঠিক রাখার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। এতে সারাবিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে চালের বাজার স্থির রয়েছে।
টিসিবির পরিবার কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণ প্রধানমন্ত্রীর সুচিন্তার ফল উল্লেখ করে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার এ কার্ডের মাধ্যমে এই উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় এ কাজ চলমান রাখবে। পাশাপাশি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মসূচিও চলমান থাকবে। তবে এতো বড় কর্মযজ্ঞ দুই একটা ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক পরিবেশকের মধ্যে অপরাধ করার প্রবণতা আছে, তবে সব পরিবেশক সমান নয়। কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ সময় তিনি বলেন, ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও জেলেদের জন্য বিশেষ খাদ্য সহায়তাসহ সরকারের নানা কর্মসূচির আওতায় বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে বছরে টিসিবির মাধ্যমে আরও ৬ লাখ টন বিতরণ করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, টিসিবির পণ্যের সঙ্গে চাল যুক্ত হওয়ায় মানুষের জন্য আরও সুবিধা হলো। জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী এজন্য মানুষ কিছুটা চাপে আছে। সেজন্য টিসিবির মাধ্যমে চাল বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক কোটি পরিবার পাবে এই সুবিধা। এতে তাদের কষ্ট কিছুটা কমবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে টিসিবির পরিবার কার্ডের মাধ্যমে চাল দেওয়া হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে বলে জানান তিনি।
বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, গত এক বছর যুদ্ধের কারনে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। এতে সাধারণ মানুষ টিসিবির পণ্যের সঙ্গে চাল দেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। তাদের সেই দাবির প্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
টিসিবি জানায়, পরিবার কার্ডধারী একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এবারে মসুর ডালের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমানো হয়েছে। ক্রেতারা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকায় কিনতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহারিচালক সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।