স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার পরও শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে বাংলাদেশ: বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩২ PM , আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৩২ PM

উন্নয়নশীল দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার পরও তথা ২০২৬ সালের পরও বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। গত সোমবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে আবুধাবিতে অনুষ্ঠেয় ১৩তম ডব্লিউটিও মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এক সাধারণ পরিষদের বৈঠকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য মসৃণ ও টেকসই 'ট্রানজিশন পিরিয়ড' দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে ২০২৬ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়া সব অঞ্চলে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আসা পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশের অধিকার হারানোর আশঙ্কা ছিল বাংলাদেশের।
ডব্লিউটিও এখনো কোনো সময়সীমা না দেওয়ায় বাংলাদেশ একটি নির্দিষ্ট সময় শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করবে।
'স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে উন্নয়ন অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন' হিসেবে উল্লেখ করে ডব্লিউটিওর মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা বলেন, 'আজ ডব্লিউটিও'র সদস্যরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের গতির যে কোনো ক্ষতি রোধ ও এই প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।'
আরও পড়ুন:- এলডিসি থেকে উত্তরণের পর ইইউ’র কাছে জিএসপি সুবিধা চান প্রধানমন্ত্রী
তার মতে, স্বল্পোন্নত দেশগুলো যেসব চ্যালেঞ্জে পড়ে সেগুলো মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এটি এসব দেশের জনগণকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশ এবং ডব্লিউটিও'র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে উত্তরণের পর আরও ছয় বছর বাণিজ্য সুবিধা বাড়ানোর জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বর্তমানে ৪৮ স্বল্পোন্নত মধ্যে বাংলাদেশ ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা ব্যবহার করে শুল্ক সুবিধার শীর্ষে আছে। বাংলাদেশের রপ্তানির ৭৩ শতাংশেরও বেশি অংশ বাণিজ্য সুবিধার আওতায় আছে।
২০১৭ সালে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ঘোষণায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে উত্তরণ পর্যায়ে যে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে তাতে সহায়তা করার জন্য ডব্লিউটিও সদস্যদের অনুরোধ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এলডিসি গ্রুপ ২০২০ সালে ডব্লিউটিওকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়।
এই সিদ্ধান্তের খসড়া প্রণয়ন, জমা দেওয়া ও চূড়ান্ত করার প্রাথমিক পর্যায় থেকেই জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এলডিসি ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে ট্র্যাকশন ও বহুপাক্ষিক সমঝোতা সৃষ্টির জটিল ও বিস্তৃত প্রক্রিয়ায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন:- সৌদি-আমিরাত থেকে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করবে বাংলাদেশ
স্বল্পোন্নত দেশে উত্তরণের পর ডব্লিউটিও'র বিদ্যমান এলডিসি-নির্দিষ্ট বিশেষ বিধানগুলো সম্প্রসারণের জন্য বর্তমানে এলডিসি সাব-কমিটিতে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সদস্যরা ১৩তম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
এদিকে ২০২৬ সালে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করতে বাংলাদেশকে জিএসপি+ সুবিধা দেয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইইউ’র সদর দফতরে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি যে- ২০২৬ সালে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে জিএসপি+ সুবিধা দেবে।’