সরকারি মূল্যের দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও পেঁয়াজ

আলু
  © ফাইল ছবি

দেড় মাস আগে দেশের বাজারে যখন প্রায় সব পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তখন মূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তিনটি নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে নির্ধারিত দামে আলু, দেশি পেঁয়াজ ও ডিম—এই তিন পণ্য বিক্রি হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু সরকারি সংস্থা মাঠে নামিয়েও নির্ধারিত সেই দাম বাজারে কার্যকর করা যায়নি। উল্টো দেড় মাস পরে দাম এখন আরও বেড়েছে। বেঁধে দেওয়া দামের দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ ও আলু। ডিমের দাম দ্বিগুণ হয়নি, তবে দাম বেড়েছে।

সর্বশেষ দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও আলুর। গতকাল রোববার রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ, মগবাজার ও রামপুরা বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। 

দেশি পেঁয়াজের সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি কেজি ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। মূলত আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণেই দেশের বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এই সময়ে বাজারে দেশি পেঁয়াজ সরবরাহ কম থাকায় আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর বেশি নির্ভর করতে হয়। গত সপ্তাহে ভারতীয় পেঁয়াজ কিনেছি ৮০ টাকা কেজিতে। সপ্তাহ ঘুরে সেই পেঁয়াজ কিনলাম ১১০ টাকায়।

পেঁয়াজ আমদানির বড় অংশ হয় ভারত থেকে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড বা বৈদেশিক বাণিজ্যবিষয়ক মহাপরিচালকের কার্যালয় শনিবার প্রতি টন পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করেছে। এর আগে ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক বাড়িয়েছিল। ফলে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে এবং দেশে পেঁয়াজের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। তিন দিনের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে এখন প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সরকার খুচরা বাজারে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায়। সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে দ্বিগুণ দামে, প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। গত বৃহস্পতিবারও আলুর দাম ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে ছিল। তিন দিনের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, আলুর সরবরাহে সংকট রয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য সবজির দাম বাড়তি থাকার কারণে আলুর চাহিদা বেড়েছে। সে কারণেও দাম বেড়েছে বলে মনে করেন অনেক বিক্রেতা।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, ভারত সরকার নতুন করে পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়ার ফলে দেশের বাজারে তার প্রভাব বেশি পড়েছে। ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তাই ভবিষ্যতে আমদানিতে খরচ আরও বাড়তে পারে।