আইইইএফএ এর গবেষণা

ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে বাঁচবে ১১ হাজার কোটি টাকা

সৌরবিদ্যুতে
  © ফাইল ছবি

দেশের শিল্প-কারখানার ছাদ থেকে প্রায় চার হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। ছাদভিত্তিক এ সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে দিনের বেলা গ্রিড বিদ্যুতের তুলনায় অর্ধেক দামে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ছাদে দুই হাজার মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন হলে বছরে ১১ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ছাদে এসব সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমবে। ফলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) লোকসান কমবে।

প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানাইসিস (আইইইএফএ)। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ প্রতি ইউনিট প্রায় ৫ টাকা। শিল্প-কারখানা প্রতি ইউনিট গ্রিড বিদ্যুৎ ৯ দশমিক ৯০ টাকায় এবং বাণিজ্যিক ভবন ১০ দশমিক ৫৫ টাকায় কিনছে। চলতি বছরের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে নেট-মিটারিংয়ের আওতায় ও এর বাইরে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের সক্ষমতা আছে ১৬০ দশমিক ৬৩ মেগাওয়াট।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ছাদে বাস্তবায়নযোগ্য সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবুজ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি সবচেয়ে সাশ্রয়ী, যা থেকে ভবনের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এই তহবিলটির আকার মাত্র ৪০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি আরও ৬৯টি পরিবেশবান্ধব প্রকল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে ঋণ সহজে পাওয়া যায় না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিও (ইডকল) ছাদে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনে অর্থায়ন করে। তবে তা এই খাতের মোট চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমানে এ খাতে ব্যবহৃত সোলার প্যানেল এবং চারটি আনুষঙ্গিক উপকরণের ওপর আরোপিত আমদানি শুল্ক ১১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এই খাতের বিকাশে উচ্চ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে।

গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির মাত্রাতিরিক্ত আমদানি কমাতে ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো উচিত। ছাদে সৌরশক্তির ব্যাপক ব্যবহারের অন্যতম বাধা হলো পর্যাপ্ত লোকবল না থাকা, প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সক্ষমতার অভাব। এক্ষেত্রে গুণগতমান নিশ্চিতকরা জরুরি।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু ছাদে স্থাপিত সৌরবিদ্যুতের যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়, তাই বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উচিত এ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার প্রক্রিয়া সহজ করা।