বাজার তদারকি করতে খাদ্য অধিদপ্তরের ৪ ভিজিলেন্স টিম গঠন

নিত্যপণ্য
  © ফাইল ছবি

যত দিন যাচ্ছে তত বেড়েই যাচ্ছে নিত্যপণ্যের দাম। আগে মৌসুমে পণ্যের দাম কম থাকলেও এখন আর সেই হিসাব মিলে না। বাজার সিন্ডিকেটের কারণে মৌসুমেও পণ্যের দাম আকশচুম্বী।

এবার চালের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রেক্ষিতে বাজার তদারকি ও ঢাকা মহানগরের চলমান ওএমএস কার্যক্রম পরিদর্শন করবে খাদ্য অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) খাদ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ও উপ-পরিচালকদের সমন্বয়ে ৪টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করে এক আদেশ জারি করেছে অধিদপ্তর। খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এ আদেশে বলা হয়েছে, প্রতিদিন একটি টিম নির্ধারিত দিবসে অতিরিক্ত মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ মোতাবেক কমপক্ষে ৪টি ওএমএস বিক্রয়কেন্দ্র (দোকান ও ট্রাকসহ) এবং ২টি বাজার পরিদর্শন করবে।

নির্ধারিত ছক মোতাবেক পরিদর্শন প্রতিবেদন পরবর্তী কর্মদিবসের মধ্যেই মহাপরিচালক খাদ্য অধিদপ্তর বরাবর দাখিল করতে হবে। প্রতিটি টিমের সমন্বয়কারীরা মাঝে মাঝে মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদফতর এর অনুমতিক্রমে ভিজিলেন্স টিমের সঙ্গে পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করবে। এছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশিত জরুরি পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

দেশের জনগণকে ন্যায্যমূল্যে খাদ্য সহায়তা প্রদানে বর্তমানে ঢাকা মহানগরীসহ সব সিটি কর্পোরেশন এবং বিভাগীয় ও জেলা শহরে ওএমএস কার্যক্রমে চাল ও আটা বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এদিকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা করে বাড়িয়েছে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো। একইসঙ্গে প্রতি কেজি আটায় ৫ টাকা ও চিনির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। শুধু এসব পণ্যই নয় ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরপরই বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ তালিকায় চাল, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসও রয়েছে।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর কাজ ঘোষণা দিয়ে করলেও এবারে চুপিসারেই দাম বাড়াল।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানি ও একাধিক সুপার শপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়, যা নির্বাচনের আগ বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম বাড়িয়ে ৫ লিটারের বোতল নির্বাচনের আগে বাজারে ছাড়লেও নতুন দামের এক লিটারের সয়াবিন তেল নির্বাচনের পরই বাজারে এসেছে।

তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, গত বছরের নভেম্বরে ডলারের দাম বেড়ে যায়। প্রতি ডলারের মূল্য ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২২-১২৪ টাকা হয়ে যায়। ওই সময় ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে এই দাম সমন্বয়ের আবেদন করে গত নভেম্বরের ৯ তারিখ।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন ও ব্যবসায়ীরা মিলে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করলেও নির্বাচন সামনে রেখে দাম বৃদ্ধির অনুমতি দেয়ার বিষয়টি আর এগোয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন এলসি খোলার জন্য ডলার কিনতে হচ্ছে ১২৬-১২৭ টাকায়, যে কারণে তারা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

সাধারণত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দেওয়ার পরই কোম্পনিগুলো বাজারে দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে। এর আগে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা করা হয়।