লাগাম টানতে ভোক্তার অভিযান; পালিয়ে গেলেন আড়ৎ মালিকেরা!

চালের আড়ৎ
  © ফাইল ছবি

নির্বাচনের পর থেকেই ভরা মৌসুমে ঘোষণা ছাড়াই বেড়ে গেছে চালের দাম। বাজা‌রের লাগাম টেনে ধর‌তে তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি। তবে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা চালের দামকে অস্বাভাবিক বলার পর দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নে‌মে‌ছে সরকা‌রের খাদ্যমন্ত্রণালয়। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে চা‌লের আড়‌তে অভিযান যায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক‌টি বাজার মনিটরিং টিম। আড়ৎ খোলা, অথচ সেখানে অধিকাংশ মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, অভিযানের খবরে দোকান খোলা রেখেই পালিয়ে যান আড়তের মালিকরা।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. জয়নাল আবেদিনের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে বাজার মনিটরিংয়ে যায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক‌টি বাজার মনিটরিং টিম।  

শুরুতে এক‌টি চা‌লের আড়তে গি‌য়ে সং‌শ্লিষ্ট কাউকে খুঁজে পায়নি মনিটরিং টিম। এরপর আরও দু‌টি আড়তে একই ঘটনা ঘ‌টে। আড়ৎ খোলা, অথচ সেখানে কাউকেই পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, অভিযানের খবরে দোকান খোলা রেখেই পালিয়ে যান আড়তদাররা।

পরে আরেকটি আড়তে গি‌য়ে দেখা মে‌লে মহাজ‌নের। দিনাজপুর রাইস এজেন্সি না‌মের এই আড়তে কিছু অনিয়ম পাওয়া যায়। অনিয়‌মের জন্য আড়তদারকে কো‌নো শা‌স্তি দেয়া হয়নি। শুধু আড়তের মালিক আসাদুজ্জামানকে সতর্ক ক‌রেন উপসচিব।

আড়তদার আসাদুজ্জামান জানান, তার চালের মূল্যের তালিকা নবায়ন করা হয়নি। তবে তাকে কোনো জরিমানা করা হয়নি। দুপুর প্রায় সা‌ড়ে ১২টার দি‌কে অভিযান পরিচালনাকারীদের সঙ্গে যোগ দেন কৃষি মার্কেট চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মন্টু। প্রায় ঘণ্টাখা‌নে‌কের বে‌শি সময় নি‌য়ে চলা অভিযানে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিমের স‌ঙ্গে ছি‌লেন তিনি।

এক ডজ‌নের বে‌শি আড়তদারের কাছে চা‌লের দাম বাড়ার কারণ জান‌তে চান অভিযান পরিচালনাকারীরা। কম‌বে‌শি সব আড়তদারের ভাষ্য জেলা পর্যা‌য়ে মিলার‌রা হঠাৎ ক‌রেই চা‌লের দাম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছেন। চালের দাম বাড়ার স‌ঙ্গে আড়তদারদের আসলে কো‌নো দায় নেই।

অভিযান শে‌ষে উপ‌স্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের স‌ঙ্গে কথা ব‌লেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. জয়নাল আবদিন। তি‌নি ব‌লেন, মাঝখানে দাম বেড়ে গিয়েছিল, এখন সেটি কমছে এবং সেটি ভালোই। আমরা আশা করছি খুব দ্রুত চালের দাম আগের পর্যা‌য়ে চলে আসবে।

অভিযানের খবর পে‌য়ে আড়তদার‌দের পা‌লি‌য়ে যাওয়া এবং অনিয়ম পে‌য়েও শা‌স্তির আওতায় না আনার বিষ‌য়ে উপসচিব ব‌লেন, ব্যবসায়ীরা চলে গেছেন। আমরা আবার আসব। প্রয়োজনে না বলে আসব।

তি‌নি ব‌লেন, এখানে আমরা জ‌রিমানা করব না, ব্যাপারটা এমন নয়। যদি অনিয়ম পাই, বড় অ্যাকশনে যাব। আসলে আমরা বড় ধরনের কোনো অনিয়ম পাইনি। বিক্রির সঙ্গে ক্রয়ের খুব একটা তফাৎ নেই। 

অভিযানের খবর শু‌নে আড়তদার‌দের পা‌লি‌য়ে যাওয়ার প্রস‌ঙ্গে কৃষি মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব‌লেন, কো‌নো কিছুর দাম বাড়‌লে ভোক্তা অধিকার কিছু বুঝে না বুঝে আমাদের জরিমানা করত। আমরা তাদের বুঝাতাম সমস্যাটা কোথায়, তারপরও তারা বুঝত না। তারা জরিমানা করে, সেজন্য আমাদের ব্যবসায়ীদের ম‌ধ্যে আতঙ্ক। লোকগুলো কাছাকাছি আছে, পালিয়ে যায়নি।