ইফতার-তারাবির সময় হচ্ছে লোডশেডিং
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১০:৩৫ AM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ১০:৩৫ AM

রমজানের প্রথম দিনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে হয়েছে লোডশেডিং। এমনকি ইফতার ও তারাবির সময় হচ্ছে লোডশেডিং। তবে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে। গরম যত বাড়ছে, লোডশেডিংও তত বাড়ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি সংকটের কারণে চাহিদার পুরোটা বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া চলছে সেচ মৌসুম। এ কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। রমজানে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ইফতার ও তারাবির সময় তাই তেলভিত্তিক কেন্দ্র চালানো হচ্ছে। তার পরও এই দুই সময়ে লোডশেডিং হচ্ছে।
এছাড়াও রোজার প্রথম দিনে রাজধানীর অনেক এলাকায় গ্যাস সংকটের খবর পাওয়া গেছে। অনেক এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দুপুরের পর থেকে গ্যাস থাকছে না বা থাকলেও চাপ একেবারেই কম। ফলে অনেককেই ইফতার কিনে খেতে হচ্ছে। দেশের দুটি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটি বন্ধ থাকায় গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো যাচ্ছে না। চলতি মাসের শেষে এলএনজি টার্মিনালটি ফের চালু হবে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিংয়ের জন্য দায়ী ট্রান্সমিশন ও জ্বালানির সীমাবদ্ধতা। জ্বালানি সীমাবদ্ধতার কারণে বেশি দামে ফার্নেস অয়েলনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালানো হচ্ছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে পরিমাণ গ্যাসের প্রয়োজন, তা পাওয়া যাচ্ছে না।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের মঙ্গলবারের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রমজানের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ চাহিদার সময় (ইফতার ও তারাবি নামাজ) ১২৬ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে। এদিন প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং
বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিকেল ৫টায় শুরু হয় সর্বোচ্চ চাহিদার সময়। গতকাল বিকেল ৫টায় ৭৪ মেগাওয়াট, ৬টায় ৯০ মেগাওয়াট, ৭টায় ১২৬ মেগাওয়াট, ৮টায় ৯০ মেগাওয়াট, ৯টায় ৬২ মেগাওয়াট, ১০টায় ৬০ মেগাওয়াট, ১১ টায় ৯৮ মেগাওয়াট এবং রাত ১২টায় ১০১ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
গত ছয় দিনের লোডশেডিংয়ের চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দিন দিন লোডশেডিং বাড়ছে। গত ৭ মার্চ দেশে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ছিল ৮৩ মেগাওয়াট, ৮ মার্চ ৯৩ মেগাওয়াট, ৯ মার্চ ৯৬ মেগাওয়াট, ১০ মার্চ ৮০ মেগাওয়াট, ১১ মার্চ ১৪৯ মেগাওয়াট এবং ১২ মার্চ ৯০ মেগাওয়াট।
রাজধানীর চেয়ে গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিং হচ্ছে বেশি। কোনো কোনো এলাকায় দিনে-রাতে মিলিয়ে ৯ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। নেত্রকোনার বিরিশিরির বাসিন্দা মাকসুদা মেঘনা এই প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিনই দুপুরের পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়বার লোডশেডিং হয়। প্রতিবার ৩০ থেকে ৪০ মিনিট বিদ্যুৎ থাকে না। পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজধানী ঢাকা প্রাধান্যের শীর্ষে থাকে সবসময়। তাই ঢাকার বাইরে লোডশেডিং বেশি হয়।
পিডিবি সূত্র জানায়, এবার রমজানে বিদ্যুতের সম্ভাব্য চাহিদা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার থেকে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুতের এ চাহিদা থাকবে। এ সময় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ধরা হয়েছে ন্যূনতম ১৫৪ কোটি ঘনফুট। কিন্তু মঙ্গলবার বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৮৮২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।