কিছুটা কমেছে সবজির দাম, উঠানামা করছে কাঁচামরিচ-পেঁয়াজ-মাংসের দাম

কাঁচামরিচ
  © ফাইল ফটো

বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। মুরগি ও অন্যান্য মাংসের দাম অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে। কিছু জেলায় কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম উঠানামা করছে। সেই সঙ্গে এর মধ্যে রয়েছে মাছ ও মাংসের দামও। 

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজি ও ডিমের দাম। কমতির দিকে মুরগি দামও। সরবরাহ ঠিক থাকায় দাম স্থিতিশীল আছে বলছেন বিক্রেতারা। আজ শুক্রবার নগরীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। তবে এই মুহূর্তে যে দাম সেটিও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ডজনে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। দেশি মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকলেও কিছুটা উঠানামা করছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। ব্রয়লার ১৮০ টাকা এবং ২৮০ টাকায়।

রাজশাহী
রাজশাহীর বাজারে কমেছে কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দাম। অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বেড়েছে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। কাঁচামরিচ কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। 

একইভাবে পূর্বের দামেই জেলার বাজারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কেজিতে ২০ টাকা কমে আদা বিক্রি হচ্ছে ২০০টাকা কেজি দরে। রসুন কেজিতে ২২০ টাকা, পটল বিক্রি ৩০ টাকা, করলা ৫০ টাকায়, বেগুন ৬০ টাকায়। এদিকে বেড়েছে মুরগির ডিমের দাম। প্রতি ডজনে ১২ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা এবং গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে।

কেজিতে ৫০ টাকা কমে রুইমাছ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সাড়ে ৪০০ টাকার পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে।

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেশি থাকায় পেঁয়াজের দাম কমেছে। ক্রেতারা বলছেন, আগের চেয়ে দাম কমলেও অনেক জিনিসের দাম পূর্বের দামে এখনও আসেনি। সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়াসহ বাজারগুলোতে নিয়মিত নজরদারিতে বাড়াতে নতুন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান ক্রেতারা। 

বরিশাল
বরিশালের বাজারগুলোতে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। প্রতিকেজি মুরগিতে বেড়েছে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত। মুরগি খাবার ও বাচ্চার দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাত দিচ্ছেন বিক্রেতারা। জেলার বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০-১৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়। এ ছাড়া সোনালি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায় এবং লেয়ার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।

এদিকে, সবজির বাজারে কাঁচামরিচের কেজি এখনও ২০০ টাকা। অন্যান্য সবজিতেও কিছুটা দাম বেড়েছে। এর মধ্যে
টমেটো ১৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০, করলা ৬০, ফুলকপি ৬০, গাজর ১৬০, কাঁচামরিচ ২০০, শসা ৪০, বরবটি ৬০ টাকা। এছাড়া মুদি বাজারে আদার দাম কমলেও পেঁয়াজ ১১০ টাকা, আলু ৫০, প্রতি হালি ডিম ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, বাজার এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বাজারে সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। তাই দাম নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং জরুরি।

বগুড়া
বগুড়ায় শাক-সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে, ক্রেতাদের অভিযোগ দাম কমলেও এখনো নাগালের বাইরে। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকায়, অন্যান্য সবজির মধ্যে করলা ৬০ টাকা, আলু ৫৫, পেঁয়াজ ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গেল সপ্তাহের তুলনায় জেলার আজকের বাজারে প্রতিটি কাঁচা শাক-সবজিতে কেজি প্রতি ১০-১৫ টাকা কমেছে। 

বিক্রেতারা জানান, সবজির দাম-দর স্থিতিশীল রয়েছে। গরুর মাংস ৫০ টাকা কমে ৭০০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৭০ টাকা আর সোনালি মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের হালি গেল কয়েক দিনের  তুলনায় ২ টাকা কমে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, এখনও ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসেনি পণ্যের মূল্য। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের দাবি, বাজার ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখলে আরও সহনীয় করা যাবে।

সিলেট
ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পরও অস্থিতিশীল রয়েছে সিলেটের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজার। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই সিলেটের বাজারে প্রায় সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েছে। বেশিরভাগ সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। বেড়েছে পটল, ফুলকপি, বাঁধাকপি দামও। এ সপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে পটল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।

এদিকে জেলায় দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। এ সপ্তাহে কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।

মাংসের দামেও অস্থিতিশীলতা রয়েছে। বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ টাকা, লাল মুরগি প্রতি পিস ৬২০ টাকা ও সোনালি মুরগি প্রতি পিস ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৭৭০ টাকা ও খাসীর মাংস প্রতি কেজি ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা বলছেন, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামই চড়া। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে পরিবার নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি তাদের।

খুলনা  
গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুলনার বাজারে  কমেছে সবজির দাম। তবে বৃদ্ধি পেয়েছে কাঁচামরিচের দাম। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। খুলনার বাজারে গত সপ্তাহের চেয়ে রসুন কেজিতে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ১৬০টাকা থেকে ২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের দাম কেজিতে ৪০টাকা বৃদ্ধি পেয়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। এছাড়া বরবটি ঢেড়শ পেঁপে, পটলের দাম কেজিতে  ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা কমেছে। পেঁয়াজ রসুন আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। পেঁয়াজ কেজিতে ১১৫ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা এবং আলু ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।