১০ কোটি টাকার কমলা ও মাল্টা ধ্বংস করছে কাস্টমস!

চট্টগ্রাম
  © সংগৃহিত

বিদেশ থেকে আমদানি করা ২১ কন্টেইনার বোঝাই ১০ কোটি টাকা মূল্যের ফল ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। আমদানিকারক ছাড় না করায় বন্দরে পড়ে থাকা এসব ফল অনেকটা খাবার অনুপযোগী। তাই আগামী সপ্তাহেই সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং পয়েন্টে ধ্বংস করা হবে মামলা জটিলতায় নিলামে বিক্রি করতে না পারা ৪০০ মেট্রিক টন কমলা এবং মাল্টা।

সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং পয়েন্টে ধ্বংস করা হবে মামলা জটিলতায় নিলামে বিক্রি করতে না পারা ৪০০ মেট্রিক টন কমলা এবং মাল্টা। 

 

চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে বর্তমানে ৯ হাজারে বেশি পণ্য বোঝাই কন্টেইনার পড়ে রয়েছে যেগুলো অনেক আগেই নিলামে বিক্রি করার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। এরমধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা ফল বোঝাই বিশেষায়িত রেফার কন্টেইনার কয়েকশ। এ ধরনের ২১টি কন্টেইনার বোঝাই অন্তত ৪০০ মেট্রিক টন ফল ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাস্টম হাউজ।

 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘৪০০ মেট্রিক টনের মতো ফল রয়েছে। আগামী সপ্তাহে সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং স্টেশনে নিয়ে এসব ফল ধ্বংস করা হবে।’

 

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আমদানি করা কমলা-মাল্টা-ম্যান্ডারিন এবং ড্রাগন ফলের বর্তমান বাজার মূল্য প্রতি কেজি ২০০ টাকার বেশি। সেই হিসাবে প্রতিটি কন্টেইনারে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ফল ছিল যেগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ধ্বংস করতে বাধ্য হচ্ছে। আমদানি সংক্রান্ত জটিলতায় যেমন ফল বোঝাই এসব কন্টেইনার আটকা পড়েছিল, তেমনি আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কায় আমদানিকারকদের পণ্য ছাড় না করার কৌশলও ছিল এখানে।

 

ফলমন্ডি মেসার্স এস এস এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সামশুদ্দিন সবুজ বলেন, ‘পোর্টে যে রেফার কন্টেইনারগুলো থাকে, সেগুলোর ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। ফলে পণ্য খালাস করতে করতে হিসাবে অনেক টাকা যুক্ত হয়ে যায়। ফলে আমদানিকারক পণ্যটা নিতে পারছে না। এখন পোর্ট এগুলো ডাম্পিং করে ফেলবে।’

 

ফলমন্ডি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আলম বলেন, ‘ডিউটি বেশি, ডলারের দাম বেশি এবং বাজারে চাহিদা কম। এসব হিসাব করে লোকসান হলে আমদানিকারক আর পণ্য খালাস করে না।’

 

বিপুল পরিমাণ আমদানি করা ফল বন্দরের ইয়ার্ডে পড়ে থাকার পাশাপাশি নিলামে তুলতে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষেত্রে কাস্টমের দীর্ঘসূত্রিতাকেই দুষছেন বিডার অ্যাসোসিয়েশন। তবে শুল্কায়ন জটিলতায় কোনো মামলা হলে, নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সেই পণ্য নিলামে বিক্রি করতে পারে না কাস্টম হাউজ। ফল বোঝাই ২১ কন্টেইনারও মামলা জটিলতায় নিলামে তোলা যায়নি।

 

কাস্টম বিডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াকুব চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো নিলামের জন্য অপেক্ষা করি। কিন্তু কাস্টম থেকে আমাদের অবহিত করা হয় না। তাদের অসহযোগিতার জন্যই এসব ফল নষ্ট হচ্ছে এবং পরে তারা ডাম্পিং করছে।’

 

ফলসহ পচনশীল পণ্যের গুনগত মান বজায় রাখতে রেফার কন্টেইনারগুলোকে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখতে হয়। আর এই খাতে লাখ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বাধ্য হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।