২৬ দেশে যাচ্ছে খড়-পাট-কচুরিপনা দিয়ে তৈরি ৩১ পণ্য
- মোমেন্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ PM , আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:২০ PM
-10123.jpg)
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি বিষয়ক চিন্তা থেকে রাজবাড়ী সদরের ভবদিয়া এলাকায় 'গোল্ডেন জুট প্রোডাক্ট' প্রতিষ্ঠিত হয়। রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হাকিম আলী সরদারের উদ্যোগে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানটি খড়, পাট, হোগলা পাতা ও কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করছে ৩১ প্রকার পণ্য। এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে কানাডা, জাপান, চীন, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, সৌদি আরবসহ ২৬টি দেশে, যা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করেছে।
গোল্ডেন জুট প্রোডাক্টের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে পদ্মার ভাঙনে নিঃস্ব হওয়া বহু মানুষ এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন। কর্মীদের জন্য প্রশাসনও বিভিন্ন সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে। কারখানায় বছরে প্রায় কোটি টাকা মুনাফা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন এই উদ্যোগের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে, এবং নারী শ্রমিকদের সুস্বাস্থ্যের জন্য মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির প্রধান উদ্যোক্তা মো. হাকিম আলী সরদার নিজের জমি, সঞ্চিত টাকা এবং ইসলামি ব্যাংকের সহায়তায় 'গ্লোবাল গোল্ডেন জুট অ্যান্ড ক্রাফট লিমিটেড' প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এটি 'গোল্ডেন জুট প্রোডাক্ট' নামে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে ৮০০ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছেন, এবং চুক্তিভিত্তিক আরও ১২০০ শ্রমিক কাজ করছেন। বেশিরভাগ শ্রমিকই নারী এবং পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো থেকে আসা।
প্রতিষ্ঠানে পাট, কচুরিপানা, হোগলা পাতা ও খড় দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পণ্য যেমন নার্সারি পট, ফ্লোর ম্যাট, পেপারস্ ম্যাট, ব্যাগ, ঝুড়ি, টিফিন বক্স, পেট হাউস, টিস্যু বক্স, ফাইল বক্স, ফুল ঝুড়ি ইত্যাদি। শ্রমিকদের মধ্যে নারী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও কাজ করছেন। ফাতেমা আক্তার নামে একজন নারী শ্রমিক বলেন, পদ্মার ভাঙনে তাদের সব কিছু হারিয়ে গেলেও এখানে কাজ করে তিনি নতুন জীবন শুরু করেছেন।
এছাড়া, গোল্ডেন জুট প্রোডাক্টের পণ্য বৈদেশিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা পাচ্ছে, কারণ পণ্যগুলো পরিবেশবান্ধব। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মো. আলাউদ্দিন শুভ বলেন, এখন ধানের খড় এবং কচুরিপানা দিয়ে নতুন পণ্য তৈরি করা হচ্ছে, যা বিশ্বের ২৬টি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে।
গোল্ডেন জুট প্রোডাক্টের এইচ আর এডমিন সাইদ হোসেন বলেন, উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়ায় বিদেশে এর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর রাজবাড়ী বিসিক শিল্প নগরীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক চয়ন বিশ্বাস জানান, বিসিক নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের উন্নতির জন্য কাজ করছে, যার ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ছে।