চট্টগ্রাম

কাটেনি ভোজ্যতেলের সংকট; মিলছে না চাহিদার অর্ধেকও

ভোজ্যতেল
  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রামে ভোজ্যতেলের সংকট এখনও অব্যাহত রয়েছে। চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে একাধিক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। খুচরা থেকে পাইকারি বাজার, কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতল সরবরাহ পুরোপুরি কমে গেছে। এর ফলে বাজারে সয়াবিন তেলের জন্য হাহাকার চলছে এবং ক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন। সিন্ডিকেটের কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, ফলে চট্টগ্রামে ভোজ্যতেলের সংকট আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়ানো হলেও বাজারে এর চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে ভোজ্যতেলের বাজার পুরোপুরি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে, আর অনেক কোম্পানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। পাইকারি বাজারে ১০০ লিটার সয়াবিন তেলের চাহিদার বিপরীতে ৩০ থেকে ৪০ লিটার পাওয়া যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করছেন, মিল মালিকরা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন, যার ফলে বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে, রমজানে ভোজ্যতেলের সংকট বাজারকে অস্থির করে তুলতে পারে।

ভোজ্যতেলের বাজারে অস্থিতিশীলতার একাধিক কারণ রয়েছে। ডলার সংকট, আমদানির কমতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এর মধ্যে অন্যতম। বিশেষ করে, ইন্দোনেশিয়ায় পাম অয়েলের উৎপাদন সংকট এবং বায়োডিজেলে পাম অয়েল ব্যবহারের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের বুকিং রেকর্ড ছুঁয়েছে।

ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ভোজ্যতেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়ানো হয়। বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকা হয়েছে, এবং খোলা পাম তেলের দামও ১৪৯ টাকা থেকে ১৫৭ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া, পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৮৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা।

ভোজ্যতেলের আড়তদার কামরুল ইসলাম জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ৬ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পণ্যটির দাম বৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীরা চিঠি দিয়েছিলেন। তবে নানা ধরনের চাপের পর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সেই দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব ফিরিয়ে নিয়েছে। যদিও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়েছে, তবুও মিল মালিকরা সরবরাহ স্বাভাবিক করেননি। তারা এখনও সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, যার কারণে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম স্থিতিশীল হচ্ছি না।