প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নীলফামারীর গ্রামীণ নারীরা

অর্থনীতি
স্বপ্ন চূড়া হস্ত কুটির শিল্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারা  © টিবিএম ফটো

কিছুদিন আগেও এখানকার নারীদের অলস সময় কাটত, পরিবার-পরিজন ও সংসার নিয়ে ছিল দুঃচিন্তা। স্বামীর একার আয় দিয়ে সংসার চালানো ছিল খুবই কষ্টকর। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানেই পাল্টে গেছে সবকিছু।

সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা, হয়েছেন স্বাবলম্বী, মুখে ফুটেছে হাসি। আর এ সবকিছুর মূলে পারঘাট আলোর বাজারের সমন্বয়ক শংঙ্কর রায়সহ তার কয়েক বন্ধুর সমন্বয়ে সামান্য কিছু পুঁজি নিয়ে গড়া স্বপ্ন চূড়া হস্ত কুটির শিল্প।

নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষীচাপ ইউনিয়নের পারঘাট আলোর বাজারে গড়ে ওঠা স্বপ্ন চূড়া হস্ত কুটির শিল্প থেকে লক্ষীচাপ, পলাশবাড়ী এবং পাশ্ববর্তী ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ও সোনারায় ইউনিয়নের ৩৬০ জন নারী মাত্র এক মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে হয়েছেন স্বাবলম্বী।  

এখানে নারীরা অবসর সময়ে বাড়িতে বসেই তাদের নিপুন হাতে ২০ ধরনের নানান আকৃতির পণ্য  তৈরি করছেন। তারা পাট দিয়ে তৈরি করছেন  ম্যাট, আনিশা ম্যাট, ওয়াল ম্যাট, রাউন্ড ম্যাট, ব্যাগ এবং হোগলা পাতা দিয়ে  ইউসেফ,  ফুলদানী, টব, বাস্কেট সহ নানান রকমের পণ্য।

এসব পণ্যের বাজার মূল্য প্রায় ৩০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত।  সপ্তাহে ২-৩ দিন নারীরা তাদের তৈরিকৃত এসব পন্য  হস্তান্তর করেন এখানে।  আর এতেই তাদের মাসিক আয় হয় আনুমানিক ৫০০০- ৭০০০ টাকা। 

এ সব পণ্য তৈরির কাচাঁমালের যোগান আর্টিশান ও বিডিকেশন কোম্পানী দিয়ে থাকে এবং মাঝে মধ্যে নিজ উদ্দ্যোগে নোয়াখালী, ফেনী, ভোলা, বরিশাল কুমিল্লা থেকে কাচাঁমাল সংগ্রহ করা হয় এবং তৈরিকৃত সকল পন্য বিডিকেশন ও আর্টিশান কোম্পানির মাধ্যমে পাঠানো হয় জার্মানী, জাপান, ইতালি, ফ্রান্স,মরোক্ক,হংকংসহ বিদেশের  বিভিন্ন জায়গায়। 

একটা সময় যে  গ্রামীণ নারীদের সময় কাটতো অলসভাবে তারাই এখন স্বপ্ন দেখছেন আকাশ ছোঁয়া।

পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সুমিত্রা রানী, কনিকা রানী, ফুলো বালা বলেন, এখান থেকে আয় করে তাদের সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এখন আর আগের মত সংসারে অভাব মনে হয় না তাদের। অনেক ভালো আছেন তারা।

এ বিষয়ে স্বপ্নচূড়া হস্ত কুটির শিল্পের সমন্বয়ক শংকর রায় বলেন, গ্রামাঞ্চলের নারীদের স্বাবলম্বী করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা চাই তারা যেন এখানে কাজ করে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন করতে পারে।