বেড়েছে ক্রেডিট কার্ডের ঋণ

নিত্য জিনিসপত্রের অসহনীয় দাম, মুদ্রাস্ফীতি, বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মধ্যে জীবনযাত্রার খরচও বেড়েছে ব্যপক হারে। তাই ব্যায়ভার কমাতে সাধারণ মানুষ বাড়িয়ে দিয়েছে ক্রেডিট কার্ডে ঋণের পরিমাণ। বাড়তি খরচের চাপ সামাল দিতে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের অনেকে এখন ক্রেডিট কার্ডের ঋণে ঝুঁকছেন বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের ব্যবধানে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ২৯ শতাংশ বেড়ে গেছে। ২০২১ সালের জুনে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। গত জুনে এ লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকায়। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ২৯ শতাংশ বা ৫৫৬ কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে এক বছরের ব্যবধানে দেশে ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বেড়েছে ১০ লাখ ৫১ হাজার ৫৪৯টি। গত জুন শেষে দেশের ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ লাখ ৫২ হাজার ৮৯১টিতে। গত বছরের জুনে এ সংখ্যা ছিল ২৭ লাখ ১ হাজার ৩৪২টিতে। শুধু তা–ই নয়, মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ক্রেডিট কার্ডে মানুষ ১২০ কোটি টাকা বেশি ঋণ করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত এপ্রিলে বিগত ৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ক্রেডিট কার্ডে, যার পরিমাণ ২ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয় গত মার্চে, যার পরিমাণ ২ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা।  

সাধারণত ক্রেডিট কার্ডে কেনাকাটার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিনা সুদে ঋণসুবিধা মেলে। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে মেলে কিস্তিতে অর্থ পরিশোধের সুবিধা। আবার বিদেশযাত্রায় বা দেশের ভেতরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে নানা ধরনের ছাড়ও পাওয়া যায় ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের ক্ষেত্রে। এ কারণে মানুষ খরচের চাপ কমাতে বা নানা ধরনের ছাড়ের সুবিধা নিতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএন থাকলেই চলবে না, রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্রও জমা দিতে হবে। গত ৯ জুন বাজেট ঘোষণার সময় এ প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ব্যাংকাররা আশঙ্কা, এর ফলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সূত্রঃ প্রথম আলো