আকু দায় সমন্বয়ের পর রিজার্ভ নামল ৩৪ বিলিয়নে

ডলার
  © প্রতীকী ছবি

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) দায় সমন্বয়ের পর রিজার্ভ নামল ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ের জন্য আকুতে পরিশোধ হয়েছে ১৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

এর আগে বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০২০ সালের মে মাস শেষে ছিল ৩৩ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা পরের মাসেই বেড়ে হয় ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে ২০২১ সালের অগাস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডালারে পৌঁছেছিল।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন ঠেকাতে গত সপ্তাহে ডলার বিক্রি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে রোববার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, সারের মতো এলসি বাধাগ্রস্ত না করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরের দিন ডলার বিক্রির পরিমাণ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্লেখ্য, গত অর্থবছরের পুরো সময়ে ৭৬২ কোটি ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাজারে ডলার বিক্রির ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সময়ের জন্য এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) ১৩৫ কোটি ৭০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে। যদিও গতকাল পর্যন্ত এ দায় সমন্বয় দেখানো হয়নি। যে কারণে গতকালও রিজার্ভ ছিল ৩৫ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৫৭৭ কোটি ডলার। আজ সম্বনয়ের পর রিজার্ভ নামল ৩৪ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারে।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২০২০ সালের ২৪ জুন। এরপর আর রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামেনি। গত সেপ্টেম্বরে আকুতে ১৭৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। এর আগে গত ১২ জুলাই ১৯৬ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে। তার আগে গত ১০ মে আকুতে ২২৪ কোটি ডলার পরিশোধের পর রিজার্ভ নামে ৪২ বিলিয়ন ডলারের নিচে।

আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। ইরানের রাজধানী তেহরানে আকুর সদর দপ্তর। এ ব্যবস্থায় সংশ্নিষ্ট দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর আমদানির অর্থ পরিশোধ করে।

রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আমদানি দায় পরিশোধের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে প্রথম তিন মাসে এলসি খোলা ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমেছে। তবে আগে খোলা এলসির দায় পরিশোধের কারণে আমদানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ। একই সময়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স কমতে থাকায় রিজার্ভে ধারাবাহিক পতন হচ্ছে। এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে গত ৩১ অক্টোবর ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদাকে জানানো হয়, নিজস্ব উৎসে ডলার সংস্থান করেই এলসি খুলতে হবে। তবে রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নর ছাড়াও কয়েকজন সচিবকে নিয়ে বৈঠক করে জানিয়ে দেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, সারসহ কিছু পণ্যের এলসি বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। বেসরকারি খাতের এলসির ক্ষেত্রেও ডলার সংস্থান করতে হবে।