গলাচিপায় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার প্রস্তুতিমূলক মহড়া
- আরেফিন লিমন, পটুয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৮ PM , আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৫৮ PM

শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে ও মনোবল বাড়াতে গলাচিপা উপজেলা ইউএনও'র উদ্যোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার আগে পাবলিক পরীক্ষার আদলে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আরেকটি পরীক্ষা।
শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) প্রথমবারের মতো পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ৮৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ও দখিলের ৩ হাজার ৩৯৪ জন পরিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল এর নিজ উদ্যােগে এসএসসি ও দাখিল শিক্ষার্থীদের প্রাক প্রস্তুতিমূলক শর্ট সিলেবাসের আলোকে এ পরীক্ষা নেয়া হয়। প
রীক্ষাটির তত্ত্বাবধানে ছিলো উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস এবং বাস্তবায়ন করে গলাচিপা স্কিল ল্যাব।
জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দূর করতে ও মনোবল বাড়াতে করোনা মহামারীর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এতে একযোগে উপজেলার মোট ১৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরীক্ষা চলে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে ইংরেজি এবং গণিত এই দুই বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এক ঘণ্টা ৩০ মিনিট করে দুইটি বিষয়ে সময় দেওয়া হয় তিন ঘন্টা। যার নম্বর ছিল দুটি বিষয়ে ৫০ করে মোট ১০০ নম্বর। পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্র ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তিনি ওইগুলো বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাধ্যমে মূল্যায়ন করাবেন।
সরকারি কোনো নির্দেশনা না থাকলেও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নিজ উদ্যোগে এ আয়োজন করেন তিনি।
এর আগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য গত ০১ ফেব্রুয়ারী শুরু করে ১০ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত চলে শিক্ষার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন কার্যক্রম। বোর্ড পরীক্ষার আদলে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো তদারকি এবং পর্যবেক্ষণ করেন। কেন্দ্রগুলোতো মাধ্যমিকের বিভিন্ন স্কুল শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র গলাচিপা থানায় জমা রাখা হয় এবং পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে থানা থেকে তা সরবরাহ করা হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো সরেজমিনে মনিটর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্রে নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করেন আনসার ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।
ব্যতিক্রমী এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরে পরীক্ষার্থীরা জানায়, এমন পরীক্ষা আগে কখনো হয়নি। ইউএনও গলাচিপার উদ্যােগে বোর্ড পরীক্ষার আগে প্রাক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা হওয়ায় অনেকটা ভীতি দূর হয়েছে।
অভিভাবকরা জানায়, চূড়ান্ত পরীক্ষার আদলে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের অনেক উপকারে আসবে। এ রকম একটি মহতী উদ্যোগ নেওয়ায় ইউএনও মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, পরীক্ষার আগে পরীক্ষা দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি ও মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা আজ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অনেক কিছু জানতে পেরেছে যা চূড়ান্ত পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে সহায়ক হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে এই পরীক্ষা। ইউএনও গলাচিপার নিজ উদ্যাগে প্রশ্ন পত্র তৈরি করে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের প্রাক প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এ পরীক্ষায় স্কুল প্রধান, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, এসএসসি ও দাখিল শিক্ষার্থীদের জীবনে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। এখানে অনেক ভয়ভীতির বিষয় থাকে। তাই পুরো বোর্ড পরীক্ষার আদলে আমরা পরীক্ষাটা নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই পরীক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দূর করা ও প্রস্তুতি যাচাই করা। পরীক্ষায় যারা ভালো করবে তাদের যেমন উৎসাহ দিতে পারবো। তেমনি যারা খারাপ করবে তাদের চিহ্নিত করে বিভিন্ন প্যাকেজ প্রোগ্রাম ও স্পেশাল ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২২ সালে দশমিনা উপজেলায় ইউএনও মহিউদ্দিন আল হেলাল করোনা কালীন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রস্তুতিমূলক পরীক্ষা নেয়। সেখানে ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় তার ধারাবাহিকতায় এবার গলাচিপা ও দশমিনায় একযোগে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের প্রাক প্রস্তুতিমূলক এ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।