বাকৃবিতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী বিশ্ব দুগ্ধ দিবস
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ১০:৩১ AM , আপডেট: ৩১ মে ২০২৫, ১১:৫৬ AM

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) দুই দিনব্যাপী উদযাপিত হতে চলেছে 'বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫'। আগামী পহেলা জুন (রবিবার) বিশ্ব দুগ্ধ দিবসকে কেন্দ্র করে শনিবার ও রবিবার নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগ। দেশের মানুষের কাছে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের গুরুত্ব তুলে ধরা এবং দুধ উৎপাদনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য। এবারের প্রতিপাদ্য 'আসুন দুগ্ধশিল্প এবং দুধের প্রভাব উদযাপন করি।'
বিশ্ব দুগ্ধ দিবস -২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসকল তথ্য তুলে ধরেন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম। শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের ডিন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম, পশু পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক ড. খান মোঃ সাইফুল ইসলাম,পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের ড. সুবাস চন্দ্র দাস, ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড এ কে এম মাসুম প্রমুখ।
সম্মেলন চলাকালীন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম বলেন, দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণে জনগণের আগ্রহ বাড়ানোর মাধ্যমে ডেয়রি শিল্পের প্রসার ঘটানো হলো বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপনের প্রধান লক্ষ্য ।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে বাকৃবির ডেয়রি বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে এবং দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী ১৫টি প্রতিষ্ঠানের সহযোগীতায় দুইদিন ব্যাপি নানা আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। আগামী ৩১মে প্রথম দিনের আয়োজনে থাকছে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। আরও থাকছে হোম কিচেন ডেয়রি রেসিপি প্রতিযোগিতা এবং বিজয়ীদেরকে পুরষ্কৃত করা হবে। ১লা জুন দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে প্রায় আড়াই হাজার স্কুল শিশুদের দুধপান করানো হবে । পাশাপাশি বর্ণাঢ্য র্যালি ও পরে সচেতনতামূলক সেমিনার এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক ড. আশিকুল ইসলাম বলেন, "বর্তমানে আমাদের দেশে প্রায় ১৫ দশমিক ০৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মতে প্রতিদিন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক লোকের অন্তত এক গ্লাস দুধ সরবরাহ করতে হলে আমাদের প্রায় ১৫ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন দুধের প্রয়োজন। বিশেষজ্ঞদের মতে যেখানে প্রতিদিন ২৫০ মি. লি. দুধ সরকার সেবানে আমাদের প্রাপ্যতা হচ্ছে ২৩৫ মি. লি.। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের দেশে এখনও প্রচুর দুধের ঘাটতি রয়েছে। তবে দুধের এই ঘাটতি দূরীকরণে দুধের উৎপাদন বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই।"
তিনি বলেন আরও বলেন, "এ বছর প্রায় আড়াই হাজার শিশুদের জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার গাইডলাইন সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।"
বাকৃবিতে দুধ উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো হারুন -অর- রশীদ জানান, বাকৃবির ডেইরি খামারে প্রত্যেক দিন ৫শ লিটার দুধ উৎপাদিত হয়। যা শিক্ষার্থী ও শিক্ষেকের সংখ্যা বিবেচনয় চাহিদার তুলনায় নগণ্য। বাকৃবির নিজস্ব ডেইরি খামারের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে বর্তমানে প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার শিক্ষার্থীর দুধের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ডেয়রি খামারের দুধ উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা প্রয়োজন। এই পরিমান অর্থ বরাদ্দ করা হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর দুধের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। তবে বাজেট মাত্র ৮৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। কোন শিক্ষার্থী যদি খামারে গিয়ে দুধ চায় তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না কমপক্ষে ১ থেকে ২ লিটার করে দুধ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)র উদ্যোগে সর্বপ্রথম ২০০১ সালে বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদযাপন শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশেও এই দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।