সরকারি নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন সেই বেলায়েত
- মোমেন্টস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১২:৩৭ PM , আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১২:৩৭ PM
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে আলোচনায় আসা ৫৫ বছর বয়সী গাজীপুরের বেলায়েত শেখ বেসরকারি স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের জার্নালিজম, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। আজ সোমবার দুপুর থেকে তার ক্লাস শুরু হওয়ার কথা আছে।
এর আগে বেলায়েত রাজশাহীর বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একই বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু দূরত্ব ও মায়ের আপত্তির কারণে তিনি শেষ পর্যন্ত স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান।
এ বিষয়ে বেলায়েত বলেন, রাজশাহীতে ভর্তি হওয়ার বিষয়ে আমার মায়ের আপত্তি ছিল। এ ছাড়া গাজীপুর থেকে রাজশাহীর দূরত্বও অনেক বেশি। এখন বাড়ি থেকেই ঢাকায় ক্লাস করতে পারব
বেলায়েত ১৯৮৩ সালে প্রথমবার এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও টাকার অভাবে সেবার নিবন্ধন করতে পারেননি।
১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সে বছর সারাদেশে বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি।
এর কয়েক মাস পর তিনি একজন আলোকচিত্রী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি 'দৈনিক করতোয়া' পত্রিকার গাজীপুর জেলার শ্রীপুর প্রতিনিধি।
কর্মজীবন শুরু করার পর বেলায়েত আর পড়ালেখা না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং তার ছোট ভাইদের মাধ্যমে তার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বর্তমানে তিনি ২ ছেলে ও ১ মেয়ের জনক।
তার মেয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও কলেজে যেতে আগ্রহী ছিলেন না। এমনকি, তার বড় ছেলেও পড়ালেখা করতে আগ্রহী নন। ছেলে-মেয়েরা তার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন বেলায়েত।
কিন্তু অদম্য বেলায়েত অবশেষে ২০১৯ সালে এসএসসি এবং ২০২১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। যে বছর তিনি এইচএসসি পরীক্ষা দেন, একই বছর তার ছোট ছেলেও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
আশপাশের মানুষের উপহাস আর বিদ্রুপ উপেক্ষা করে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া বেলায়েতের স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ার। সে অনুসারে চলতি বছরের ১১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ঘ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু সুযোগ পাননি।
পরে একে একে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরীক্ষা দেন তিনি। কিন্তু সুযোগ পাননি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে।