দেশসেরার স্বীকৃতি পেল না তেঁতুলিয়ার স্কুলছাত্রী জান্নাতুন

দেশসেরার স্বীকৃতি পেল না তেঁতুলিয়ার স্কুলছাত্রী জান্নাতুন
  © মোমেন্টস ফটো

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের ফতুয়াপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুন নেহার। প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০২২ এর ভারসাম্য দৌড় প্রতিযোগিতায় দেশসেরা হয়েছেন।

গত ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দেশের আটটি বিভাগের অংশগ্রহণকারীদের পিছনে ফেলে দেশসেরা ভারসাম্য দৌড়-২০২২ এর খেতাব অর্জন করে। কিন্তু প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও স্থানীয়ভাবে পায়নি উৎসাহ পায়নি স্বীকৃতি। কেউ নেয়নি উদ্যোগ।  

ছাত্রীটি গরীব কৃষিক পরিবারের মেয়ে জান্নাতুন। বাবার সামান্য কৃষি জমি ছাড়া নেই কোন অর্থ উপার্জনের দ্বিতীয় কোন উপায়। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে জান্নাতুন সবার ছোট, বড় দুইভাই কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বাবা-মা আর ভাইদের ব্যাপক উৎসাহে জান্নাতুনের এই অগ্রযাত্রা। ভবিষ্যৎতে হতে চান ভাল খেলোয়াড়। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের উৎসাহ ও স্বীকৃতি না পাওয়াই যেন অন্তরায়। পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে হারিয়ে যাবে এমন প্রতিভা এমনটাই মনে করছেন আশপাশের মানুষ।  

দেশসেরা হবার গল্প শুনতে ছুটে গিয়েছিল। জানা যায় ছোট বেলা থেকেই জান্নাতুন ছিলেন ডানপিটে স্বভাবের।  স্কুলের বিভিন্ন খেলার প্রতিযোগিতায় তার অংশগ্রহণ ছিল চোখে পরার মত। পরিবারের সবচেয়ে ছোট হওয়ায় অত্যন্ত আদরের ছিল সবার কাছে। ভারসাম্য দৌড় খেলায় অংশগ্রহণের পূর্বে বাড়ির উঠানই ছিল অনুশীলেনর মাঠ। বড় ভাই নাজিমুদ্দিন সকাল বিকাল অনুশীলন করাতো জান্নাতুনকে।   

জান্নাতুন বলেন, আমাদের স্কুলে কোন খেলার মাঠ নাই।  খেলার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় আমি সকাল-বিকাল বাড়িতেই অনুশীলন করেছি। আমি বড় হয়ে দেশের হয়ে বিদেশে খেলতে চাই।  

জান্নাতুনের পিতা মহিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমার কন্যার ইচ্ছা ও আগ্রহ আছে খেলার প্রতি, তাই আমিও চাই সে একজন দক্ষ খেলোয়াড় হয়ে উঠুক। কিন্তু খেলার জন্য উৎসাহ ছাড়া কিছুই দেবার নেই আমার। যদি সুশীল সমাজের ক্রীড়া অনুরাগীরা সহযোগিতা করে তাহলে আমার বিশ্বাস বড় হয়ে জান্নাতুন দেশের জন্য ভাল খেলা উপহার দিতে পারবে। কিন্তু সমাজের বিপরীত স্রোতের মানুষেরা বলেন জান্নাতুন যে দেশসেরা হল। কি পেল? তখন আর কিছুই বলার থাকেনা।  

ফতুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলাম বলেন, জান্নাতুন আমাদের গর্ব, তার অর্জন আমাদের বিদ্যালয়ের সুনাম এনে দিয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের এই প্রতিভা গুলোকে স্বীকৃতি দিতে পারলে  নতুন ক্রীড়ামোদী শিক্ষার্থীরা উৎসাহ পাবে।  তৈরি হবে নতুন নতুন দেশসেরা খেলোয়াড়।  

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, জান্নাতুন আমাদের তেঁতুলিয়ার গর্ব। আমরা নিকট সময়ের মধ্যে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জান্নাতুনকে উৎসাহ জানাবো।  পাশাপাশি তার পড়াশোনার জন্য সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবো।


মন্তব্য