জনপ্রিয় নায়ক মান্নার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
- বিনোদন মোমেন্টস
- প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:২১ PM , আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:০৫ PM

আজ অভিনেতা আসলাম তালুকদার ওরফে মান্নার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান এই অভিনেতা। যদিও তার স্ত্রী শেলীর দাবি, ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন মান্না। শেলী নিজেও একজন চিকিৎসকের মেয়ে উল্লেখ করে নানা সময়ে এই মৃত্যুর পেছনে ভুল চিকিৎসার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এখনো তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়ছেন।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না ও মান্না ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। এদিকে ভক্ত ও চলচ্চিত্রপ্রেমীরা স্মরণ করছেন তাঁদের প্রিয় অভিনেতাকে।
চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেছিলেন, মান্নার মৃত্যুতে এ দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আজ মান্না বেঁচে থাকলে, আরেক দিকে শাকিব তাহলে চিন্তা করুন কী পরিমাণ চলচ্চিত্র নির্মাণ হতো? সালমান শাহ মারা যাওয়ার পর একটা বড় শূন্যতার সঙ্গে বড় ক্ষতি হয়েছে যেমন, তেমনই মান্নার প্রয়াণের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
১৯৬৪ সালে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় জন্মগ্রহণ করেন মান্না। মৃত্যুর পর তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়।
আরো পড়ুুন:- পাক ক্রিকেটার নাসিম শাহের সঙ্গে জড়াচ্ছে উর্বশীর নাম!
মান্নাকে প্রথম চলচ্চিত্রে আসার সুযোগ করে দেন নায়ক রাজ রাজ্জাক। ‘তওবা’ (১৯৮৪) ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে তাঁর। এরপর একের পর এক ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে সেরা নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন মান্না। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্র অঙ্গণে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন তিনি।
অভিনয় জীবনে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন মান্না। তার সিনেমায় বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের কথা উঠে এসেছে বারবার। বঞ্চিত মানুষের কথা সিনেমার পর্দায় সুনিপুণভাবে তুলে ধরে তিনি সবার মন জয় করেন। তাই তিনি ছিলেন আপামর জনসাধারণের প্রিয় নায়ক।
একসময় বড় পর্দায় চিত্রনায়ক মান্নার সিনেমা মানেই ছিল হলভর্তি দর্শক আর সফল ব্যবসা। দেশের চলচ্চিত্র যখন অশ্লীলতা নিয়ে সংকটে পড়েছিল, তখন সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে মান্না গঠন করেন ‘কৃতাঞ্জলী চলচ্চিত্র’ নামে একটি প্রযোজনা সংস্থা। তার প্রযোজনায় তৈরি হয় ‘লুটতরাজ’, ‘স্বামী-স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’সহ অনেক ব্যবসাসফল ও প্রশংসিত সিনেমা।
‘বীর সৈনিক’ (২০০৩) সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন মান্না। তার অভিনীত ‘আম্মাজান’ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের সর্বাধিক ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সিনেমাটির জন্য তিনি ১৯৯৯ সালে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে বাচসাস পুরস্কার পান।
মান্না অভিনীত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে- দাঙ্গা, লুটতরাজ, তেজী, আম্মাজান, আব্বাজান, বীর সৈনিক, শান্ত কেনো মাস্তান, বসিরা, খল নায়ক, রংবাজ বাদশা, সুলতান, ভাইয়া, টপ সম্রাট, চাঁদাবাজ, ঢাকাইয়া মাস্তান, মাস্তানের উপর মাস্তান, বিগবস, মান্না ভাই, টপ টেরর, জনতার বাদশা, রাজপথের রাজা, এতিম রাজা, টোকাই রংবাজ, ভিলেন, নায়ক, সন্ত্রাসী মুন্না, জুম্মান কসাই, আমি জেল থেকে বলছি, কাবুলিওয়ালা ইত্যাদি।
তার অভিনীত আম্মাজান চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। তিনি বীর সৈনিক চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং আম্মাজান চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসাবে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনি তিনবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অর্জন করেন এবং বেশ কয়েকবার বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন।
মান্না তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করার পাশাপাশি আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে গেছেন।