সর্বশেষ বিয়েটাও টিকলো না পরীমনির
- বিনোদন ডেস্ক
- প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১৬ PM , আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২১ PM

অভিনেতা শরীফুল রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠান তিনি। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না অভিনেতা শরীফুল রাজ। সকালে ঘুম থেকে উঠে গণমাধ্যম থেকে ডিভোর্স লেটার পাঠানোর বিষয়ে জানতে পারেন তিনি।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই বিষয়ে জানতে চাইলে শরীফুল রাজ গণমাধ্যমকে বলেন, তাই নাকি? আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। এ অভিনেতা আরও বলেন, ভাই আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছি। এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।
রাজের সঙ্গে ডিভোর্সের কারণ হিসেবে মনের অমিল হওয়া, বনিবনা না হওয়া, খোঁজখবর না নেয়া, মানসিক অশান্তির কথা উল্লেখ্য করেন পরীমণি।
বিচ্ছেদের আগের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে রাজের সংসার ছেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পরীমণি। ফেসবুকে তিনি লেখেন-‘কালকের দিনটা আমার জীবনের অনেক গুরুত্ব একটা দিন!’
আরও পড়ুন:- রাজকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন পরী
এর আগে গত জুন মাসের প্রথমে গণমাধ্যমকে পরীমণি বলেন, চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে রাজ আমাদের বিয়ের কাবিননামা ছিঁড়ে ফেলেছে। শুধু ছেঁড়া বললে সেটি ভুল হবে। সে কাবিননামা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলেছে। তখন রাজ বলেছিল, সে এই বিয়ে মানে না। কাবিননামা ছিঁড়লেই কি একটি বিয়ে ভেঙে যায়? এতসব হওয়ার পরেও আমি ওর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি।
উল্লেখ্য, নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘গুণিন’ সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে সম্পর্কে জড়ান শরিফুল-পরীমণি। প্রেমের সাতদিনের মাথায় ২০২১ সালে ১৭ অক্টোবর মালা বদল করেন দুজন। এরপর ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি হলুদ অনুষ্ঠানের পর ২২ জানুয়ারি রাতে জমকালো আয়োজনে ১০১ টাকা দেনমোহরে শরিফুল রাজ-পরীমণির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়। অতিথির তালিকায় ছিলেন তিন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চয়নিকা চৌধুরী ও রেদওয়ান রনি। সঙ্গে দুই পরিবারের স্বজনরা।
রাজের সঙ্গে সংসারজীবনের ১০ মাসের মাথায় কোলজুড়ে আসে সন্তান। এর এক দিন পর ছেলের ছবিসহ নাম প্রকাশ করেন পরীমণি। তিনি জানান, রাজের সঙ্গে মিল রেখে ছেলের নাম রেখেছেন শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।
দেড় বছরের দাম্পত্য জীবনে নানা ঘটনা আলোচনায় এসেছে। গত ২০ মে পরীমণির বাসা থেকে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে বের হয়ে আসেন রাজ। এরপর ২৯ মে রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সুনেরাহ, তানজিন তিশা ও নাজিফা তুষির সঙ্গে বেশ কিছু ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ফাঁস হয়। সেই ঘটনায় দুজনের মধ্যকার সম্পর্কে আরও দূরত্ব তৈরি হয়।
আরও পড়ুন:- অপু বিশ্বাসের নামে থানায় জিডি
উল্লেখ্য, পরীমনির প্রকৃত নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি। ১৯৯২ সালের ২৪ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলায় জন্ম তার। ছোটবেলা থেকেই নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন পরী। মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি। পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিও পেয়েছিলেন।
তবে সিনে জগতের প্রবেশের আগে পরে তার একাধিক বিয়ে ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা শোনা যায়।
২০০৭ সালের দিকে পরীমনির মা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি অনেকটা রহস্যাবৃত। এরপর বাবার সঙ্গে সাভারে বসবাস শুরু করেন পরীমনি।
মাঝে মাঝে বরিশালে নানা বাড়ি গিয়ে থাকতেন। সেখানে মাসুদ নামের দূর-সম্পর্কের এক আত্মীয়ের সঙ্গে প্রেম ও পরে বিয়ে হয়।
একদিন নানা বাড়ি থেকে মাসুদের সঙ্গে পালিয়ে চট্টগ্রামে চলে যান। ১ মাস পর আবারও বরিশালে ফিরে আসেন। এরপর বিচ্ছেদ হয় মাসুদের সঙ্গে।
২০১৪ সালের দিকে পরীমনির সঙ্গে পরিচয় হয় কথিত প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের। রাজই তাকে সিনেমায় নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেন। এরপর থেকে রাজের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:- বলিউড অভেনেত্রী জেরিন খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
২০১৬ সালের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় পরীমনির সঙ্গে দুজনের বিয়ের খবর। এমনকি বিয়ের ছবি, কাবিননামা ও তালাকনামার ছবিও প্রকাশ পায় ফেসবুকে। ২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সকালে একটি ফেসবুক আইডি থেকে কিছু ছবি শেয়ার দিয়ে দাবি করা হয়, পরীমনি ইসমাইল নামের একজনের স্ত্রী।
কিছুদিন পরেই ফেসবুকে পাওয়া যায় সৌরভ কবীর নামের আরও একজনের সঙ্গে তার বিয়ের কাবিননামা এবং কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি। ছবিতে অভিষেক হওয়ার ঠিক আগের দুই বছর অর্থাৎ নাটকে অভিনয় করার সময় সেতু নামের এক ফটোগ্রাফারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তারা দুই বছর সংসারও করেছিলেন।
২০১৭ সালে তামিম হাসান নামের এক সাংবাদিকের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের কথা জানা যায়। বাগদানও হয়েছিল। তামিমকে নিয়ে প্রকাশ্যে বিভিন্ন দেশে ঘুরতেও গিয়েছেন পরী। দুই বছর প্রেমের পর ২০১৯ সালে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।
এরপর ২০২০ সালের ৯ মার্চ রাতে অভিনেত্রী ও পরিচালক হৃদি হকের অফিসে কাজি ডেকে তার সহকারী কামরুজ্জামান রনিকে মাত্র ৩ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। কিন্তু সে বিয়েও ৫ মাসের মাথায় ভেঙে যায়।
এছাড়া ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় পলাতক আসামি বিতর্কিত ব্যবসায়ী চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আজিজ তাকে বিএমডব্লিউ গাড়ি উপহার দেন বলেও জানা গেছে।
এছাড়া ছবিতে অভিনয় করা কালেই তার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। দীর্ঘদিন পরী তার ছত্রছায়ায় ছিলেন। বিভিন্ন কারণে সেই সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়। তবে এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং কিছু শিল্পপতির সঙ্গে তার সখ্য গড়ে উঠে। তথ্যসূত্র: যুগান্তর